চরমে প্রাক্তন-বর্তমান দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে দিলীপ-সুকান্ত কাজিয়া
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয় আসেনি বিজেপির, ২০০ পারের অলীক স্বপ্ন থেকে ৭৭-এর বাস্তবের মাটিতে আছাড় খেয়েছে গেরুয়া শিবির। হারের পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে গন্ডগোল চরমে পৌঁছেছে। দিন যত এগোচ্ছে বিজেপির বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির কাজিয়া ততই প্রকাশ্যে চলে আসছে।
প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকার হুকুম দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। কৌশলে দিলীপকে বাংলা থেকে তাড়াতে তাঁর দায়িত্ব বৃদ্ধির ফিকির করে বিহার, ওড়িশাসহ মোট আট রাজ্যের বুথ শক্তিশালী করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দিল্লির বিজেপির দুয়োরানী এখন দিলীপ ঘোষ। দুধ থেকে মাছি ফেলে দেওয়ার মতো করেই, দিলীপকে এড়িয়ে চলতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
২জুন বৃহস্পতিবার বিজেপিরই এক দলীয় কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দিলীপ-সুকান্তের দ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ্যে চলে। আরও একবার বেআব্রু হয়ে পড়ল রাজ্য বিজেপির কঙ্কালসার দশা। ২ জুন নদীয়ার তেহট্টে জেলা বিজেপির তরফে এক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদার, দুজনেই আমন্ত্রিত ছিলেন।
কিন্তু এদিনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ উপস্থিত থাকেল, সুকান্তর দেখা পাওয়া যায়নি। এতে বাড়ছে জল্পনা। যদিও এ প্রসঙ্গে দিলীপের বক্তব্য, সে যায়নি সেই বলতেই পারবে তিনি কেন গেলেন না। আমাকে কেউ এড়িয়ে চলছেন কি না, তা আমার জানার দরকার নেই। আরও যোগ করেন, গত ৩১ মে এই কর্মসূচি হাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুকান্তবাবুর সময় হবে না বলেই তা পিছিয়ে ২ জুন করা হয়েছিল।
তেহট্ট বিজেপির তরফেই জানানো হয়েছিল, এই কর্মসূচিতে দুজনেই হাজির থাকবেন। কেন সুকান্তবাবু হাজির থাকলেন না, তা জানা নেই বলেই এড়ালেন দিলীপ। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, বিজেপির দলীয় কাজে কলকাতায় ব্যস্ত থাকায় তিনি যেতে পারিনি।
ওইদিনই কলকাতায় বিজেপি রাজ্য দপ্তরের বাইরে চড়াও হয়ে একদল বিজেপি নেতা-কর্মী বিক্ষোভ দেখান। বিজেপির প্রয়াত রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তপন শিকদারের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আগেই বিক্ষোভ দেখানো হয়। নিজেদের বিজেপির আদি কর্মী দাবি করে বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ জানান, সুকান্ত-অমিতাভর মতো অযোগ্যরা দলের নেতৃত্বে এসে আসলে দলের ক্ষতিই করছেন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির অভূতপূর্ব সাফল্যের যারা নেপথ্য কারিগর ছিলেন, সেই সব দলঅন্ত প্রাণ বিজেপি নেতা-কর্মীদের অপমান করে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা।