বিজেপিতে ভূতেরাও বুথসভাপতি? নাড্ডার সফরের আগে চিন্তায় বঙ্গের পদ্মব্রিগেড
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মুখথুবড়ে পড়েছিল বিজেপি। গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত পদ্ম শিবির। নেতাদের দলত্যাগ আর একের পর এক নির্বাচন হারে, বাংলার মাটিতে রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে বিজেপি। বেহাল দশা সংগঠনের। এরই মধ্যে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নাড্ডা আসছেন বাংলায়। নাড্ডার সফরের আগে ঘুম উড়েছে শুভেন্দু-সুকান্তদের। সূত্রের খবর, ৮ জুন থেকে পরবর্তী দুদিনের বঙ্গ সফরে দলের বুথ স্তরের হলহকিকতের খোঁজ নেবেন নাড্ডা। আর সেই বুথভিত্তিক সংগঠনে ডাহা ফেল রাজ্যের বিজেপি নেতারা।
বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়, রাজ্য বিজেপি তৈরি করা অধিকাংশ বুথ সভাপতিরাই অদৃশ্য। কেউ কেউ বলেন, অদৃশ্য বুথ সভাপতিরা আদপে ভূতুড়ে, কেউই নাকি বাস্তবে নেই। রাজ্য বিজেপির একটি গোষ্ঠীর দাবি, এসব ঘরে বসে তৈরি করা। বাস্তবে দেখা গিয়েছে যারা এখনও বুথসভাপতি পদে বসে আছেন, তাদের অধিকাংশই আর সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে নেই। আবার অর্ধেকের হদিশ বুথসভাপতির বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই।
বিজেপির অন্দরের খবর রাজ্যের সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় বুথের তালিকা চেয়েছেন নাড্ডা। কিন্তু তালিকায় যাদের নাম আছে, তাদের অধিকাংশই বিধানসভা ভোটের পর থেকেই কার্যত বসে গিয়েছেন। নানান কারণ দেখিয়ে প্রতিবাদে বিজেপি ছেড়েছেন। আবার বেশ কিছু বুথ সভাপতি ফুলবদলে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। অধিকাংশ বুথ সভাপতির ফোন নম্বর পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। একুশের জন্য তৈরি হওয়া ৭৮ হাজার বুথের মধ্যে কতজন সভাপতি যে বাস্তবে আজও বিজেপিতে রয়েছেন, সেই তথ্যই নেই বিজেপির কাছে।
নাড্ডার সফরের সময় সব বুথ কমিটির সভাপতিদের হাজির করতে পারেন তো শুভেন্দু-সুকান্তরা? সে প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় বিজেপি। দলে অনুশাসনের নেই। তৃণমূলের চর বিজেপির অন্দরে রয়েছে বলে তিনি আরও গোল বাঁধিয়ে দিয়েছেন। বিজেপির আদি নব্য কাজিয়াও ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। দোষারোপ আর পাল্টা দোষারোপ লেগেই আছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাসের ঘরের মতো ভাঙছে বিজেপি, দলীয় নেতা-কর্মীরা কেউ কাউকে বিশ্বাস করেন না, এই অবিশ্বাসের আবহ কাটবে তো? দল বদলের জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন এমন, চারজন সাংসদ ও ডজন দুয়েক বিধায়কের নাম শোনা যাচ্ছে! এই অবস্থায় রাজ্য এসে দলের ভাঙন কি আটকাতে পারবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি?