পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য নিয়ে অ্যাপ রাজ্যের
লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বা তাঁদের পরিবার সম্পর্কে প্রায় কোনও রাজ্যের কাছেই তেমন তথ্যভাণ্ডার না থাকায় লকডাউনপর্বে মারাত্মক সমস্যা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের পাশাপাশি সব রাজ্যই নড়েচড়ে বসতে চাইছে। আর এব্যাপারেও পথ দেখাতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য শ্রম দপ্তর পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য নিয়ে শীঘ্রই একটি অ্যাপ চালু করতে চলেছে। বাংলায় যাতায়াত করা সব পরিযায়ী শ্রমিকের বিশদ বিবরণ এই অ্যাপের দৌলতে চলে আসতে চলেছে সাধারণের মোবাইলে। দিন কয়েকের মধ্যেই এই অ্যাপের নামকরণ করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
শ্রমদপ্তর সূত্রের খবর, লকডাউনপর্বে বাংলার আদি বাসিন্দা কতজন পরিযায়ী শ্রমিক তাঁদের বাড়ি ফিরেছেন, তার খতিয়ান তৈরি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ পরিযায়ী শ্রমিকের হিসেব মিলেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আরও কিছু তথ্য আসার অপেক্ষায় রয়েছে দপ্তর। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, এব্যাপারে শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। অ্যাপের নাম মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করবেন। দিন কয়েকের মধ্যেই এনিয়ে ঘোষণা হবে।
কী ধরনের তথ্য এই অ্যাপে থাকবে? দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এই অ্যাপে শ্রমিকদের নাম, পরিচয়, পরিবারের সদস্যদের নাম, বাড়ির ঠিকানা, কী ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত, কোথায় কাজ করতে যাচ্ছেন, কার অধীনেই বা কাজ করছেন— মূলত এই সব তথ্য রাখা হবে। সেই সঙ্গে তাঁর এবং তাঁর নমিনির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, এরাজ্যের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার কার্ডের নম্বরের মতো জরুরি তথ্যও থাকবে অ্যাপে। সেই শ্রমিকের কোনও বিপদে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সঙ্গে যাতে দ্রুত যোগাযোগ করা যায়, সেই ব্যবস্থা রাখার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। কোনও রকম সামাজিক প্রকল্প বা মৃত্যুকালীন প্রাপ্য অর্থ যাতে পরিবারের নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার বা সদস্য দ্রুত পেতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রেখে অ্যাপটি তৈরি করা হবে। তবে অ্যাপের পাশাপাশি এই সব তথ্য একটি নির্দিষ্ট পোর্টালেও রাখার ভাবনা রয়েছে দপ্তরের। এই অ্যাপের তথ্য আপ-টু-ডেট করতে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে নিজের সম্পর্কে বিবরণের পরিবর্তন বা পরিবর্ধনের ব্যাপারে সাহায্য করতে হবে। নইলে প্রয়োজনের সময় ভুগতে হবে তাঁকেই।