সেচসেবিত করার কাজ চলছে চাষের জমিতে
খাল সংস্কারের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ চাষের জমিকে সেচযোগ্য করে তোলা সম্ভব হয়েছে। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ বছরের মধ্যে প্রায় ৯৫০ কিলোমিটার জীর্ণ সেচখাল সংস্কার করা হয়েছে। এতে প্রায় ১ লক্ষ ৮৩ হাজার হেক্টর জমি সেচ-ক্ষমতা ফিরেছে। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মেদিনীপুর প্রধান ও শাখা খালের সংস্কারের কাজ উল্লেখযোগ্যভাবে হয়েছে। অন্যান্য জেলাতেও সেচ খাল ও প্রকল্প সংস্কারের কাজ চলছে। এতে আগামী দিনে আরও জমি সেচসেবিত করে তোলা যাবে বলে দপ্তর আশা করছে।
পুরুলিয়া, ঝাড়গ্ৰাম ও বাঁকুড়া জেলায় প্রায় দু’বছর ধরে ৫৬টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি সেচ প্রকল্প সংস্কারের কাজ চলছে। এতে খরচ হবে প্রায় ২৭৬ কোটি টাকা। ১৫টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। এতে ওই জেলাগুলিতে ১০,৬০০ হেক্টর জমিকে সেচসেবিত করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ময়ূরাক্ষী ও কংসাবতী জলাধার প্রকল্পের জীর্ণ সেচখালগুলি সংস্কারের কাজেও হাত দিয়েছে দপ্তর। এতে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এই কাজ শেষ হলে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও বীরভূম জেলায় প্রায় ৬২ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে।
ইতিমধ্যে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় জলতীর্থ সহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে মোট ১৪২টি চেকড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ১০৯ কোটি টাকা খরচের প্রকল্পের জন্য ৭৪০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরাক্ষী প্রকল্প থেকে আড়াই লক্ষ হেক্টর ও কংসাবতী প্রকল্প থেকে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের সুযোগ আছে। ডিভিসি প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে সব থেকে বেশি প্রায় ৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে জলসেচের সুযোগ আছে। বিশ্বব্যাঙ্ক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ঋণে নিম্ন দামোদর অববাহিকা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ সম্প্রসারণের একটি বড় প্রকল্প শুরু হচ্ছে। ২৯৩২ কোটি টাকার এই প্রকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা যাবে। এই প্রকল্পে ডিভিসির জীর্ণ খালগুলি সংস্কার হবে।
বড়, ছোট ও মাঝারি বিভিন্ন সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত বোরো ও রবি মরশুমে চাষের জমিতে জল সরবরাহ হয়। তবে খরিফ মরশুমে বর্ষাকালেও এখন মাঝেমধ্যে সেচের প্রয়োজন পড়ছে। গতবছরই জরুরি প্রয়োজনে দুই মেদিনীপুরে প্রায় ১২,৬০০ হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করতে হয়েছে