নাড্ডার জেলা সফর ঘিরে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি, আহত ১
বঙ্গ সফরে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। বিজেপি সভাপতির জেলা সফরের মাঝে ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল। কাজিয়ায় একেবারে চরমে পৌঁছে হাতাহাতিতে জড়ালেন দলীয় কর্মীরা। মার আর জবাবে পাল্টা মারের দাপটে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এই ঘটনায় এক বিজেপি কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার ৮ জুন হুগলিতে দুটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। প্রথমে চুঁচুড়ায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত বন্দেমাতরমভবনে এবং পরের চন্দননগরে রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গিয়েছিলেন নাড্ডা। আজ সকালে নাড্ডার কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহকে প্রকাশ্যে ধমক দেন বিজেপির সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি সূত্রে খবর, দীপাঞ্জনকে নাড্ডার জেলা সফরের যাবতীয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এমনকি নাড্ডার কর্মসূচিতে কে কে উপস্থিত থাকবেন, কে থাকতে পারবেন না, সব খুঁটিনাটি দায়িত্ব ছিল তার উপর।
দীপাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দায়িত্ব পাওয়ার দৌলতে সুযোগের সদব্যবহার করেছেন তিনি। কৌশলে নিজের অনুগামীদের কর্মসূচিতে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। তালিকায় নাম নেই এমন অনেককেই আজ হাইসিকিউরিটি জোনের মধ্যে দেখা দিয়েছে। অবাঞ্চিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন দীপাঞ্জন বাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুবীর নাগ। জেলা বিজেপির এক নেত্রীস্থানীয়ের অভিযোগ, ১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পরে সুবীর নাগকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে রাজ্য কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। কিন্তু এরপরেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে তার সখ্যতা বাড়তে থাকে। সম্প্রতি তার রাজ্য বিজেপির সদস্য পদটিও খারিজ করে দেওয়া হয়। সেই বরখাস্ত হাওয়া নেতাকে নাড্ডার সফরে ঘুরতে দেখা যেতে নতুন করে শুরু হয় জল্পনা।
যদিও ৭ জুন রাতে থেকেই ফ্লেক্স-ব্যানার নিয়ে গন্ডগোলের শুরু। সূত্রের খবর, দীপাঞ্জন গুহের অঙ্গুলিহেলনে নাড্ডার কর্মসূচির স্থল থেকে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং জেলা সভাপতি তুষার মজুমদারের ছবি দেওয়া যাবতীয় ব্যানার,ফ্লেক্স সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রাতেই সে খবর ছড়িয়ে পড়এ। ক্ষোভে ফেটে পড়েন জেলা বিজেপির একাংশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাতে, তুষার বাবুর উদ্যোগে ফের নতুন করে ব্যানার-ফ্লেক্স ইত্যাদি লাগানো হয়।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে বন্দেমাতরমভবনে এসেই হুগলির সাংসদের নজরে পরেন সুবীর নাগ। তাকে দেখা মাত্রই দীপাঞ্জনকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করেন লকেট। শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা, তার মাঝেই নাড্ডা এসে হাজির হন। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ বিজেপি নেতারাও তার উপস্থিত হন। হঠাৎই বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড পেরিয়ে ভবনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। ভিড় জমতেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এই তান্ডবের মধ্যেই কোনরকমে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান সারেন নাড্ডা। একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি হয় চন্দননগরে, সেখানেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। হাতাহাতির মধ্যেই দীপাঞ্জন গুহের অনুগামীদের মারে বিজেপি কর্মী শাশ্বত ব্যানার্জি ওরফে সতু গুরুতরভাবে আহত হন।