চাহিদা বাড়ছে বাংলার ব্রাহ্মী, তুলসী, অশ্বগন্ধার
প্রেসক্রিপশনে লেখা মডার্ন মেডিসিনের দামি দামি অ্যান্টিবায়োটিক আর কাঁড়ি কাঁড়ি ওষুধের বহরে বিরক্ত অনেকেই। তাই যত দিন যাচ্ছে, বিকল্প চিকিৎসার দিকে ঝোঁকও বাড়ছে। কতটা বাড়ছে সেই ঝোঁক? রাজ্য সরকারের ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদের হিসেব বলছে, সরকারি উদ্যোগে ব্রাহ্মী, তুলসী, অশ্বগন্ধা, থানকুনি, চিরতা, অ্যালোভেরা, একাঙ্গী সহ নানা ধরনের আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন গাছগাছালির চাষ দিন দিন বাড়ছে। বেসরকারি উদ্যোগের হিসেব জুড়লে পরিসংখ্যান বাড়বে আরও।
প্রসঙ্গত, সর্দি-কাশিতে তুলসী, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ব্রাহ্মী, এনার্জি বাড়াতে অশ্বগন্ধা, জ্বর ও বমি আটকাতে একাঙ্গী, প্রেসার কমাতে সর্পগন্ধা, লিভারের অসুখ সহ আরও নানা সমস্যায় চিরতা, ত্বকের জেল্লা বাড়াতে অ্যালোভেরা ইত্যাদি আয়ুর্বেদিক গাছগাছালির ব্যবহার ছিলই। তা উত্তরোত্তর বাড়ছে।
ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে নামখানাতে ১৫০ বিঘা জমিতে ব্রাহ্মী চাষ দিয়ে সরকারি উদ্যোগে ঔষধিগুণসম্পন্ন গাছগাছালির ব্যাপকভাবে চাষের সূত্রপাত হয় বাংলায়। আর তার মাত্র তিন বছরের মধ্যে আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন গাছের চাষ কী পরিমাণ বেড়েছে, তা শুনলে অনেকের চোখই কপালে উঠবে। ১৫০ বিঘা থেকে ১০০ গুণ বেড়ে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার বিঘা!
বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বই, চেন্নাই থেকে কোচি — দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ছুটে আসছেন বাংলার ঔষধিগুণসম্পন্ন গাছগাছালি কিনতে! পর্ষদের এক কর্তা বলেন, এর মধ্যে দেশবিদেশে সবচেয়ে বেশি চাহিদা বাংলার ব্রাহ্মীর। গুণমানে এটি নিঃসন্দেহে ভারতসেরা!
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ও সাগরে চাষ হচ্ছে ব্রাহ্মীর। একাঙ্গী (আদার মতো দেখতে ফল) চাষ বেশি হচ্ছে চার জেলায় — নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান ও বীরভূমে। সর্পগন্ধা চাষ হচ্ছে বাঁকুড়ায়। অ্যালোভেরা চাষ হচ্ছে নদীয়া, বীরভূম ও বাঁকুড়ায়। ভৃঙ্গরাজের চাষও বেশি দেখা যাচ্ছে নদীয়ায়।