শেয়ার বাজারে পতন, টাকার দাম কমছে- কপালে ভাঁজ অর্থনীতিবিদদের
দেশের অর্থনীতির হাল ফিরছে?
এর উত্তরে কিন্তু অর্থনীতিবিদরা জোরগলায় সেরকম কোনও আশার কথা শোনাতে পারছেন না। সোমবারও টাকার মূল্য ৩৬ পয়সা কমেছে। ডলারের তুলনায় টাকার দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮.২৯-য়। এই প্রথম ডলারের নিরিখে টাকার মূল্য ৭৮টাকার গন্ডি পেরিয়ে গেল। যা কপালে ভাঁজ ফেলেছে অর্থনীতিবিদদের।
সর্বভারাতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী বারবার এই টাকার মূল্যের পতনের কারণ, দুর্বল অভ্যন্তরীণ বাজার, অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি, ডলার ফুলে-ফেঁপে ওঠা এবং বিদেশি পুঁজি কমে যাওয়া। আএফএ গ্লোবালের তথ্য অনুযায়ী এই কারণ গুলির দেশীয় মুদ্রার উপর প্রভাব পড়ছে।
শুক্রবার বাজার বন্ধ হওয়ার সময় ভারতীয় টাকা মার্কিন ডলারের অনুপাতে ১ পয়সা কমে ৭৭.৮৫-এ নেমে আসে। যা ছিল সর্বকালের সর্বনিম্ন। আবার ট্রেডিং সেশন চলাকালীন টাকার দাম নিম্নমুখী হতে হতে পৌঁছায় ৭৭.৯৩ টাকায়। আর এদিন মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাজার খোলে ৭৮।২০ টাকায়। যা ধীরে ধীরে ৩৬ পয়সা পর্যন্ত কমে যায়। এই সপ্তাহে ডলারের বিপরীতে ২১ পয়সা কমেছে টাকার দাম।
মার্চ মাসের শুরুতেই ৭৭ টাকায় পৌঁছে যায় ডলারের দাম। গত ২৭ মে যা ৭৭ টাকা ৭৩ পয়সায় পৌঁছায়। এবার আরও পড়ল টাকার দাম। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের বাজার থেকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ তুলে নেওয়াই টাকার মূল্যর পতনের প্রধান কারণ।
অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে পাঁচ সপ্তাহে মোট ৯০ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি। ফলে বাড়ি, গাড়ি-সহ বিভিন্ন ঋণে সুদ বাড়তে শুরু করেছে। তবে ব্যাঙ্কের জমাতে এখনও সুদ বাড়ে নি। আসলে ঋণের চাহিদাই এখন কম। সুদবাড়ায় তা আরও কমবে। তা ছাড়া, কোভিডকালে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় যে টাকা জোগানো হয়েছিল, তার অনেকটা এখনও অবশিষ্ট আছে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে সুদ বাড়িয়ে বাজার থেকে নতুন করে নগদ অর্থ সংগ্রহের সম্ভাবনা হয়ত ব্যাঙ্কগুলির নেই। ফলে মধ্যবিত্ত মার খাবেন ধার ও জমা, দু’দিক থেকেই।
এদিকে সপ্তাহের শুরুতে, অর্থাৎ সোমবার সেনসেক্স পড়ল ১৪৫৭ পয়েন্ট, নামল ৫২,০০০-এর ঘরে। শুক্রবারের পর এদিনের এই পতনে বিএসই-র লগ্নিকারীরা হারালেন মোট ৯.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। নিফটিও পড়ল ৪০০ পয়েন্টের বেশি। আগামী দিনে শেয়ার বাজার আরও পড়তে পারে।