নির্জন সৈকত বগুরান
দিঘা-পুরীর ভীড়ে ক্লান্ত হয়ে থাকলে একবার ঘুরে আসুল এক নির্জন সমুদ্র সৈকতে। নাম বগুরান। কাথি বাসস্ট্যান্ডে নেমে দিঘা বাইপাস থেকে রাস্তা ভাগ হয়ে যায়। বাঁ দিকের রাস্তাটি গেছে দিঘা আর ডানদিকের রাস্তা গিয়েছে বগুরান। পথের দুপাশের সবুজে চোখ জুড়িয়ে যাবে। পাশে পুকুরগুলোয় চাষ করা হয় চিংড়ি।
গ্রামের কাঁচা রাস্তা, সবুজ, সোনালী বালির সৈকত, সমুদ্রের ঢেউ সব মিলিয়ে এক অনন্য অনুভূতি পাবেন। বিচ দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার হেটে গেলেই পাবেন ভান্ডারা খাল। সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে লেগুনের সৃষ্টি করেছে। এখানেই শেষ বগুরান বিচ। এরপরেই শুরু হয়ে যায় সৌলা বিচ। লেগুনে মহিলা জেলেদের মাছ ধরা, বিচে লাল কাঁকড়া, পাবেন সব রকমের স্বাদ।
বিচে সময় কাটিয়ে মন ভরলে একটা দিন হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন বাঁকিপুট, দরিয়াপুর আর পেটুয়াঘাট-এর উদ্দ্যেশ্যে। বগুরান থেকে জুনপুট পেরিয়ে বাঁকিপুট প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। এখানে বেশ কিছু উঁচু জায়গা থেকে দেখা যায় সাগরের বিস্তীর্ণ রূপ। সেখানে খানিকটা সময় কাটিয়ে চলে আসুন দারিয়াপুরে। এখানেই দেখতে পাবেন বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসের কপালকুণ্ডলা আশ্রম। কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের সূত্রপাত এখান থেকেই।
কাঁথি মহকুমার অতীতে নাম ছিল নেগুঁয়া মহকুমা। ১৮৬০ সালে বঙ্কিমচন্দ্র যশোহর থেকে বদলি হয়ে নেগুঁয়া মহকুমায় আসেন ডেপুটি কালেক্টর হয়ে। নেগুঁয়া মহকুমার সেচবাংলোয় তিনি থাকতেন। সেখানে একজন সন্ন্যাসী কাপালিক প্রতিদিন রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। তখন এ অঞ্চলে সমুদ্রতীরে গভীর জঙ্গল ছিল। এই কাপালিকই বঙ্কিমচন্দ্রের এই উপন্যাসের অনুপ্রেরনা।
খানিকটা এগিয়েই দেখা যাবে লাইট হাউস। ১০১ টা সিড়ি ভেঙ্গে একবার উঠতে পারলেই দেখতে পাবেন গঙ্গাসাগর, হলদিয়া, গেঁওখালি, নয়াচর ছাড়াও রসুলপুর নদী ও হলদি নদীর মোহনা।
এরপর চলে যান পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দরে । পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে রসূল নদী। যার স্থানীয় নাম হিজলি। ওপারেই রয়েছে হিজলি দর্গা। এখানে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবার যাতায়াত।
কিভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে দিঘাগামী বাসে নামতে হবে কাঁথি সেন্ট্রাল বাস টার্মিনালে। ট্রেনে এলে নামতে হবে কাঁথি স্টেশনে। টোটো, অটো ও গাড়ি রিজার্ভ করে বগুরান যেতে হবে।