জগদীপ ধনখড়ের যে বিতর্কগুলো বাংলার মানুষের মনে ক্ষত হিসেবে থেকেই যাবে
উপরাষ্ট্রপতি পদে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম ঘোষণা করে বড় চমক দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা। রাজ্যের রজ্যপালের দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকেই খবরের শিরোনামে থেকেছেন ধনখড়। বিতর্ক আর জগদীপ ধনখড় যেন সমার্থক হয়ে উঠেছিলেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চরমে ওঠে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্যপাল ধনখড়কে নিয়ে তৈরি হওয়া কিছু বিতর্ক-
২০১৯ সালের অক্টোবর মাস। রাজ্যে তখনও দুর্গাপুজোর মেজাজ কাটেনি। দশমীর পরে কলকাতার রাস্তায় আয়োজিত হয়েছিল কারনিভাল। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ফিরে গিয়ে ধনখড় অিযোগ করেন, তিনি কারনিভালে গিয়ে অপমানিত বোধ করেছেন। জানা যায়, সেখানে বসার ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন।
২০১৯ সালের নভেম্বর। শান্তিপুরের রাস উৎসবে যাবেন বলে রাজ্যের কাছে হেলিকপ্টার চেয়েছিলেন ধনখড়। তা না পেয়ে সেই সময় নবান্নের বিরুদ্ধে অসৌজন্যের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে তুঙ্গে ওঠে পারদ। সিএএকে সামনে রেখে পড়ুয়াদের তীব্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। এর জেরে ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাতিল করে সমাবর্তন অনুষ্ঠান। জানানো হয়, ক্যাম্পাসে আচার্যর (রাজ্যপাল) আসার প্রয়োজন নেই। এরপরই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বলেন, ‘যাদবপুরের সিদ্ধান্তে আমি স্তম্ভিত, দুঃখিত। আমার ধৈর্যের সীমা আছে।’
২০২০ সালের করোনা সংক্রমণ ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনখড়ের মধ্যে একাধিকবার সংঘাত সামনে আসে। তবে ২০২২ সালে সদস্য আচার্য বিতর্ক আলাদা করে সকলের নজরে আসে। বিধানসভায় পাশ হওয়া রাজ্যসরকারের আচার্য সংক্রান্ত বিলে বলা হয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আর রাজ্যপাল আচার্য নন, বরং মুখ্যমন্ত্রী আচার্য। এরপরই ‘আচার্য’ পদাধীকার বলে রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য পদে মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষাণা করে টুইট করেন ধনখড়। শুরু হয় বিতর্ক।
বিধানসভা অধিবেশন সংক্রান্ত বিষয়েও বিতর্ক কম হয়নি। ২০২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন জগদীপ ধনখড়। এছাড়াও রাজ্যমন্ত্রীসভার সুপারিশে রাত ২ টোয় বাজেট অধিবেশনের ডাক দিয়েও রাজ্যপাল ধনখড় শিরোনাম আসেন। জটিলতা তৈরি হয় বাবুল সুপ্রিয়র শপথ নিয়ে। বিধায়কদের শপথগ্রহণ সংক্রান্ত ফাইলের স্বাক্ষর ঘিরে রাজভবন বনাম নবান্ন সংঘাত ফের চরমে ওঠে।