সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার রোগী খুঁজতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তপরীক্ষার কর্মসূচি বাংলায়
অনেক সময়ই সাধারণ গাঁটে ব্যথা, ঘনঘন জ্বর, শুকনো কাশিতে নাজেহাল হন মানুষ-জন। ডাক্তাররা হয়ত রোগের আসল কারণ ধরতেও পারেন না! হয়ত রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায়, দূরারোগ্য বংশগত রক্তরোগ সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার আক্রান্ত হওয়ায় এমন ঘনঘন অসুস্থ হয়ে পড়েন মানুষ। এবার সেই সব রোগের কারণ খতিয়ে দেখতেই অভিনব উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য। সেই জন্য রাজ্যজুড়ে রক্তপরীক্ষার কর্মসূচি নিতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। প্রসঙ্গত, নেসট্রফ সলিবলিটি নামক রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীটি চিহ্নিত করা যায়।
তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে এমন সিকেল সেল অ্যানিমিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লক্ষ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আদপে সাড়ে চার লক্ষের বাইরেও অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত রয়েছেন। কেবল হদিশ মিলছে না। এবার সেই সব রোগীদের খুঁজতে নামছে রাজ্য সরকার। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এলাকায় এলাকায় রক্তপরীক্ষা শিবির শুরু করতে চলেছে রাজ্য। আক্রান্তের হদিশ পেতে রক্ত পরীক্ষা হবে।
রোগীদের চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করতে স্কুল-কলেজে, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে রক্তপরীক্ষা শিবির হবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে স্টেট ব্লাড সেল আড়াই লক্ষ রোগীকে চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। প্রসঙ্গত, সিকেল সেলে অ্যানিমিয়া আক্রান্তদের ক্ষেত্রে তাদের লোহিত রক্তকণিকা ক্রমশ ভাঙতে শুরু করে। লোহিত রক্তকণিকার চিরাচরিত আকার বদলে যায়। ফলে অক্সিজেন পরিবহন করার ক্ষমতা হারায় লোহিত রক্তকণিকা। রোগী ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। চিকিৎসা না হলে, রোগী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
শিশু কিশোরদের ক্ষেত্রে মূলত ২-১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে, কোনরকম উপসর্গ থাকলে রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করবে রাজ্য। সিকেল সেল আক্রান্ত হলে, বাংলার ৩৭টি থ্যালাসেমিয়া টেস্ট ইউনিটে বিনামূল্যে তাদের চিকিৎসা শুরু করা হবে। রাজ্যের আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এই উদ্যোগে নিযুক্ত করতে চলেছে রাজ্য। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের ব্লাড সেল ও মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনো হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশনের অধীনে এই পুরো কাজটি চলবে।