রোহিঙ্গাদের জন্য ফ্ল্যাট ঘোষণার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সুর বদল, নেপথ্যে হিন্দুত্ববাদীদের চাপ!
দিল্লিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। বুধবার এমনটাই ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী একটি টুইট করেছিলেন। ঠিক তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নয়দিল্লিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হবে এবং তারপরে তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। এরকমটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। অর্থাৎ যা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীতে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পশ্চিম দিল্লির বক্করওয়ালা এলাকায় ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হবে, মৌলিক সুযোগ-সুবিধা এবং সার্বক্ষণিক পুলিশ সুরক্ষা দেওয়া হবে। পুরীর টুইটের কয়েক ঘন্টা পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে বলেছে যে “রোহিঙ্গারা অবৈধ বিদেশী”। রয়টার্স জানাচ্ছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অবৈধ বিদেশীদের আইন অনুযায়ী তাদের ফেরত না পাঠানো পর্যন্ত ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হবে।”
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইটের পরই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি প্রতিবাদে সরব হয়। সম্ভবত তার জেরেই পাল্টা বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
মায়ানমারে সেনা অভিযানের পর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গাদের একাংশ। সরকারি পরিসংখ্যান মতে, খোদ রাজধানী দিল্লিতেই রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। বিগত দিনে রোহিঙ্গা ‘অনুপ্রবেশকারী’দের দেশ থেকে বিতাড়িত করতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র সরকার। মানবিকতার খাতিরে ওই শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার দাবি তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।
রয়টার্স জানাচ্ছে, রোহিঙ্গা অধিকার কর্মী আলী জোহরের অনুমান অনুসারে, এই বছরের প্রথম দিকে, প্রায় ১,১০০ জন রোহিঙ্গা দিল্লিতে এবং আরও ১৭,০০০ জন ভারতের অন্যত্র বসবাস করতেন, প্রধানত শ্রমিক, হকার এবং রিকশাচালক হিসাবে তাঁরা কাজ করেন৷
জোহর রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘‘হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির চাপে যদি এটি একটি বন্দী শিবিরে পরিণত হয় তবে তা আমাদের জন্য একটি দুঃস্বপ্ন হবে’’।