নিষ্কণ্টক পথ পেতেই কি সঙ্ঘের ডানা ছাঁটছেন মোদী-শাহ?

নীতিন গড়করি সঙ্ঘানুগত লোক, মন্ত্রিত্ব চালানোতেও তিনি সফল। তিনি বাদ পড়ায় নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে

August 18, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মোদী-শাহ কি নিজেদের পথকে নিষ্কণ্টক করতে চাইছেন? যে সঙ্ঘের হাত ধরে বিজেপির উত্থান সেই সঙ্ঘের ডানা ছাটা মোদী-শাহ? কাজকর্মে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছেন দুজনে। একে একে স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (RSS) একান্ত অনুগত, জনপ্রিয় এবং প্রশাসনিক কাজ দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন এমন বিজেপির সর্বোচ্চ কমিটি থেকে নেতাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ মোদী ও শাহের একচ্ছত্র আধিপত্যের পথে ক্রমেই চওড়া করা হচ্ছে।

দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, মোদীর অঙ্গুলি হেলনেই নাকি সঙ্ঘ প্রভাবমুক্ত সাংগঠনিক কমিটি গড়ছে বিজেপি। সঙ্ঘ অনুগত নেতাদের ছাড়াই সাজানো হচ্ছে কমিটি। সঙ্ঘ অনুগত দুই শীর্ষ নেতা এই নিয়মেই বাদ পড়েছেন। দীর্ঘদিন বাদে ১৭ আগস্ট বিজেপি সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ কমিটি, সংসদীয় বোর্ডে রদবদল রয়েছে। দেশের সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়করি (Nitin Gadkari), মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান থেকে শুরু করে হিন্দুত্ব পোস্টার বয় যোগী আদিত্যনাথ ঠাঁই পাননি কমিটিতে। কিন্তু কোন অঙ্ক কাজ করছে বিজেপির অন্দরে? ক্রমেই বাড়ছে জল্পনা।

সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ কমিটিই বিজেপির (BJP)গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। সেক্ষেত্রে এই কমিটিতে স্থান পাওয়া‌ই যেকোনও নেতার লক্ষ্য। অন্যদিকে, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী নির্ধারণ, ভোট কৌশল ইত্যাদি বিষয়ে সর্বশেষ সিলমোহর দেয় সংসদীয় বোর্ড। সেখান থেকে নীতিন গড়করি এবং শিবরাজ সিং চৌহানদের (Shivraj Singh Chouhan) বাদ যাওয়ার অর্থ হল তারা বিজেপির কাছে, গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন।

অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল, কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা (B. S. Yediyurappa), কে লক্ষ্মণ, সত্যনারায়ণ জাটিয়া, সুধা যাদব, ইকবাল সিং লালপুরাদের নিয়ে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও ভাবতে শুরু করা যোগী আদিত্যনাথ সংসদীয় বোর্ডে জায়গা পাননি।

প্রত্যেকটি নয়া সদস্যের আগমণের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্ক। সর্বানন্দ সোনেওয়ালকে সরিয়ে, হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। বিজেপির একদল মনে করেছেন, হিমন্তকে চাপে রাখতেই সোনেওয়ালকে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ কমিটিতে নিয়ে আসা হল। কর্ণাটকে বিজেপির গৃহযুদ্ধ রুখতে বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে সংসদীয় বোর্ডে আনা হয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

নীতিন গড়করি সঙ্ঘানুগত লোক, মন্ত্রিত্ব চালানোতেও তিনি সফল। তিনি বাদ পড়ায় নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, ইয়েদুরাপ্পা ও সঙ্ঘের সম্পর্ক ভাল নয়। সঙ্ঘ নানান ইস্যুতে মোদী সরকারের সমালোচনা করছে। হর ঘর তেরঙ্গা নিয়েও দ্বিধাবিভক্ত হয়েছিল দুই শিবির। ফলে, একটা জিনিস স্পষ্ট, বিজেপির অন্দরে আরএসএসের বজ্র আঁটুনি ধীরে ধীরে আলগা হচ্ছে। ফলে ২৪-এর লড়াইয়ে মোদী-শাহ পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েই ভোটে ময়দানে নামতে চাইছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen