গণধর্ষণ মামলায় দোষী ১১ জনের মুক্তি বিলকিসদের জন্য আজাদির ‘অমৃত-উপহার’?

২০ বছর আগে বিলকিসের বয়স ছিল ২১। এখন ৪১।

August 18, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার। গোধরার উপসংশোধনাগারে গত ১৫ বছর ধরে বন্দি ছিল সকলে। সোমবার মুক্তি পেয়ে তারা বেরিয়ে এসেছে। ২০০৮ সালে তাদের সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গুজরাত সরকারের শাস্তি মুকুবের মিয়ম অনুযায়ী, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আবেদন করে দোষীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই পনেরো বছর কারাবাসের পর সকলের শাস্তি মকুব হয়েছে।

জেল থেকে বেরনোর পরেই এগারোজন দোষীকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গুজরাতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়ে মালা এবং তিলক পরে বসে আছে দোষীরা!


আর তাতেই ফের আশঙ্কায় কেঁপে উঠছেন বিলকিস বানো। ভয়ঙ্কর নির্যাতন হয়েছিল তাঁর উপর। গর্ভবতী অবস্থায় পৈশাচিক অত্যাচার করেছিল ধর্ষকরা। তাঁর তিন বছরের মেয়েকে আছড়ে মেরেছিল তাঁর চোখের সামনে। ‘খুন’ করেছিল তাঁর পরিবারের ৮ জনকে। আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবনের সাজাও দিয়েছিল। সেই দোষীদেরই মুক্তির খবরে বাকরুদ্ধ বিলকিস। চোখের সামনে যারা তাঁকে ও তাঁর মা-বোনকে গণধর্ষণ করেছিল, তারাই আজ নিরাপদে ঘুরে বেড়াবে। ১৫ আগস্ট দণ্ডিত সেই ১১ জন ‘আজাদি’র স্বাদ পেয়েছ। আর প্রতি মুহূর্তে অজানা আশঙ্কায় কেঁপে উঠবেন বিলকিস।

২০ বছর আগে বিলকিসের বয়স ছিল ২১। এখন ৪১। অপ্রত্যাশিত এই পট পরিবর্তনের পরে বুধবারই প্রথম সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন তিনি।

বিলকিস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল তার অপরাধীরাই আজ মুক্ত। আদালতের রায় শোনার পরে বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা কী হবে! আমাদের একটু শান্তিতে বাঁচতে দিন।’’ সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বিলকিসের বিবৃতিতে হতাশা ঝরে পড়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘এক জন মহিলার প্রতি ন্যায়বিচার এই ভাবে শেষ হয়ে যেতে পারে? আমি তো শীর্ষ আদালতে বিশ্বাস রেখেছিলাম, সিস্টেমে বিশ্বাস রেখেছিলাম, একটু একটু করে আমার ক্ষতগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচতে শিখছিলাম। দোষীদের মুক্তি আমার শান্তি ছিনিয়ে নিল, ন্যায়ের প্রতি আমার বিশ্বাস নড়ে গেল। আমি শুধু আমার কথা বলছি না। প্রতিটি মেয়ে যারা আদালতে ন্যায়ের জন্য লড়ছে, তাদের সকলের জন্য কষ্ট হচ্ছে আমার।’’

রাজনৈতিক মহলের মতে, সামনেই গুজরাট বিধানসভার ভোট। তার আগে ২০০২-এর ‘বীর’দের পুনর্বাসন দিয়ে মেরুকরণের তাস খেলতে চাইছে বিজেপি। এরই সঙ্গে ২০০২-কে খাতায়কলমে কলঙ্কহীন প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen