লকডাউনে ভারতে বাড়ল ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস
লকডাউনে ঈশ্বরবিশ্বাস বাড়ল প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের। দেশের মনোরোগ চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি’র (আইপিএস) ইন্ডিয়ান জার্নাল অব সাইকিয়াট্রিতে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে লকডাউনপর্বে দেশবাসীর মানসিক অবস্থা ও অভ্যাসের সর্ববৃহৎ সমীক্ষা। তা থেকেই উঠে এসেছে এই তথ্য।
এইমস, পিজিআই (চণ্ডীগড়), নিমহ্যানস, এনআরএস, কল্যাণী জেএনএম, কিং জর্জস মেডিক্যাল কলেজ সহ দেশের প্রায় এক ডজন নাম করা মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানের মনোরোগ বিভাগ সম্মিলিতভাবে এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। নাম ‘সাইকোলজিক্যাল ইমপ্যাক্ট অব কোভিড ১৯ লকডাউন: অ্যান অনলাইন সার্ভে ফ্রম ইন্ডিয়া’। সমীক্ষাকারীরা দেখেছেন, এই পর্বে অন্তত ১৮ শতাংশ ক্ষেত্রে অল্পস্বল্প ঈশ্বরবিশ্বাস বাড়লেও, ২১ শতাংশের বেশি মানুষের ঈশ্বরে ভক্তি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য রকমের। গৃহবধূ থেকে চিকিৎসক, নার্স থেকে আইনজীবী, ইঞ্জিনিয়ার থেকে রাজনীতিবিদ, ছাত্রছাত্রী থেকে অবসরপ্রাপ্ত— বহু ধরনের পেশা ও বয়সের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এই সমীক্ষায়।
আশপাশের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে আপাতদৃষ্টিতে অনেকেরই হয়তো মনে হতে পারে, করোনার জন্য লকডাউনে মানুষের মনে ব্যাপকভাবে মৃত্যুভয় বেড়েছে। সমীক্ষা রিপোর্ট জানাচ্ছে, মৃত্যুভয় বাড়লেও তা খুব বেশি নয়, বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে। কিন্তু করোনার জটিল উপসর্গে আক্রান্ত হওয়ার ভয় এবং সে কারণে মানসিক চাপ বেড়েছে অন্তত ৩৮.৫ শতাংশ মানুষের। প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনেরও বেশি। ২৭.৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁদের ঘুম ভালো হচ্ছে না। বারবার উঠে পড়ছেন। ২৩.৯ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, বাইরে বেরলে তাঁরা ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন, যদি বাড়ির লোকজন তাঁদের থেকে সংক্রামিত হয়ে পড়েন! বেড়েছে দুঃখ, উদ্বেগ, খিটখিটে ভাব এবং খারাপ কিছুর পূর্বানুমান। হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কাজ করা বা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকার জন্য সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার বহু ঘটনা সংবাদ শিরোনামে এলেও, এই সমীক্ষা কিন্তু বলছে, এ জাতীয় ঘটনা ঘটছে মাত্র ১০.৩ শতাংশ।
অন্যদিকে লকডাউনে কিছু কিছু ইতিবাচক দিকও তুলে ধরা হয়েছে সমীক্ষায়। রান্নাবান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, বই পড়া এবং ব্যায়াম— এই চারটি অভ্যাসই এই সময় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। বেড়েছে সিনেমা দেখা ও ইন্ডোর গেম খেলার অভ্যাস।