দেশ বিভাগে ফিরে যান

ডবল ইঞ্জিন মধ্যপ্রদেশের ব্যর্থতা প্রকাশ্যে আনতেই মামলার ফাঁসে তিন সাংবাদিক

August 22, 2022 | 2 min read

ফের বিজেপি শাসিত রাজ্যে সাংবাদিকেরা উপর রাষ্ট্রযন্ত্রের আঘাত ঘনিয়ে এল। সরকার বিরোধী খবর করতেই জুটল মামলা। ডবল ইঞ্জিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অবস্থা বেহাল। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দৈনদশা নিয়ে সওয়াল করায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রদেশ প্রশাসন। বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ভুয়ো খবর ছড়ানো, প্রতারণা, সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের চেষ্টা ও তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মধ্যপ্রদেশের ভিন্দ জেলার দাবোহ গ্রামের ঘটনা। ওই গ্রামের এক পরিবার বারবার ফোন করেও সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে নিরুপায় হয়ে জনৈক্য গায়েন প্রসাদ বিশ্বকর্মাকে ঠেলাগাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হন। রোগী বৃদ্ধি মানুষ এবং পরিবারটির দরিদ্র বলেই জানা গিয়েছে। সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি শাসিত সরকারের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জেলাশাসক সতীশকুমার এস ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। রাজস্ব ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে টিম তৈরি করা হয়।

তদন্তের পরে ওই টিমের তরফে জানানো হয়েছে ঘটনাটি পুরোপুরি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। পরিবারটি নাকি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের জন্যে কোন ফোনই করেনি। আরও বলা হয়, গায়েন প্রসাদ বিশ্বকর্মাকে তার পরিবার প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। মিথ্যে খবর প্রচারের জন্যে, দাবোহ কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারের চিকিৎসক রাজীব কৌরভের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সাংবাদিক কুঞ্জবিহারী কৌরভ, অনিল শর্মা ও এন কে ভাটেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। মধ্যপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। 

কিন্তু রোগীর পরিবারের দাবি, প্রশাসন মিথ্যে বলছে। রোগীর ছেলে হরিকৃষ্ণ ও মেয়ে পুষ্পার বক্তব্য, ফোন করেও তারা অ্যাম্বুলেন্স পাননি। বাধ্য হয়ে ঠেলাগাড়িতে করেই তাদের বাবাকে নিয়ে যান তারা। এদিকে, প্রশাসনের আরও দাবি, ওই পরিবারটি একাধিক সরকারি প্রকল্পের সাহায্য পেয়েছে। এই দাবি তুলেই বঞ্চনার অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিচ্ছে শিবরাজ প্রশাসন। যদিও প্রশাসনের এহেন দাবির তীব্র প্রতিবাদ করেছেন রোগীর মেয়ে।  

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। সাম্প্রতিক সময় নাকি এমন ঘটনা বারবার হচ্ছে। মিলছে না অ্যাম্বুলেন্স। চলতি বছরের মার্চে অটলবিহারী বাজপেয়ি ইনস্টিটিউটের গবেষকদের সমীক্ষায় দাবি করা হয়, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার জন্য মধ্যপ্রদেশ সরকার প্রতি বছর ২২০ কোটি টাকা খরচ করে। কিন্তু তার বাস্তব প্রতিফলন কোথায়? সে প্রশ্ন থেকেই যায়। মধ্যপ্রদেশ সরকার বলছে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু প্রতি জেলায় দিনে ৫৩টির বেশি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা পাওয়া যায় না। পরিসংখ্যান বলছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স অপ্রতুল। প্রতি বছর অন্তত দশ লক্ষ মানুষকে বাধ্য হয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে হয়। তবে কি বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কঙ্কাল ঢাকতেই সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করল শিবরাজ প্রশাসন? বিজেপির পেশিশক্তির ভয়ে ভুয়ো রিপোর্ট দিলেন সরকারি আধিকারিকেরা? এই প্রশ্নগুলো থেকেই যায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bhind, #Madhya Pradesh, #FIR, #journalists

আরো দেখুন