দেশ বিভাগে ফিরে যান

উচ্চশিক্ষার আসন থেকে সরকারি চাকরি, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে সক্রিয় দুর্নীতিচক্র

August 24, 2022 | 2 min read

ফের এক ডবল ইঞ্জিন রাজ্যের দুর্নীতির চক্র ফাঁস। কিছুদিন আগেই এক আন্তঃরাজ্য চক্রের পর্দা ফাঁস করেছিল সিবিআই। উচ্চশিক্ষার আসন থেকে সরকারি চাকরির নিয়োগ, দুর্নীতির মাধ্যমে বেআইনিভাবে সব কিছুই নিশ্চিত করত সেই চক্র। আইন আর নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে ঘুরপথে চলত কাজকর্ম। তদন্ত এগোতেই একে একে ঝুলি বেড়াল বেরোচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে পড়ুয়াদের মেডিক্যালের আসন নিয়েও দুর্নীতির জাল বিস্তার করে ছিল এই চক্র। এক একটি আসন ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে। এই দুর্নীতি বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।

ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি এন্ট্রান্স টেস্ট অর্থাৎ নিটেও যে দুর্নীতি এইভাবে জাঁকিয়ে বসেছিল, তা ভাবতেই পারছে না তদন্তকারী সংস্থার। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেওয়া, ভুয়ো পরীক্ষার্থীকে দিয়ে উত্তরপত্র লেখানো এবং একেবারে শেষে খ্যাতনামা মেডিক্যাল কলেজে আসনের বন্দোবস্ত করে দেওয়া, এইভাবেই বছরের পর বছর চলছিল। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সন্দেহ, গোটা চক্রে হয়ত রাজনীতির যোগ। এই বিরাট পরিসরের দুর্নীতি রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া কি চালানো সম্ভব? সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে নয়া সংযোজন উত্তরাখণ্ড, বিজেপি শাসিত সে রাজ্যের জাল বিস্তার করেছে এই চক্র। ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে দিল্লিতে আটজন গ্রেপ্তার হয়েছে। 

সোমবার ২২ আগস্ট, উত্তরাখণ্ড পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স একটি চক্রকে ধরেছে। ১৫ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি এবং মেডিক্যালের আসন নিশ্চিত করে দেওয়ার কাজ করত চক্রটি। যেখানে প্রশ্নপত্র ছাপা হয়, সেখানোও এই চক্রের শিকড় পৌঁছে ছিল। লক্ষ্ণৌয়ের ছাপাখানা থেকে সরকারি চাকরির প্রশ্নপত্র নিয়ে, বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তা বিক্রি করা হত। বিজেপির উত্তরাখণ্ডে এভাবেই সরকারি চাকরির নিয়োগ চলছে।

একের পর এক বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যে ফাঁস হচ্ছে দুর্নীতি, নিয়োগ কেলেঙ্কারি। অবাধে টাকার নিয়ে সরকারি চাকরি দেওয়া হচ্ছে, পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজের আসন, উচ্চশিক্ষাতেও জাঁকিয়ে বসেছে এই অবাধ অর্থের বিনিমিয়ে সিট পাইয়ে দেওয়ার কারবার। জানা যাচ্ছে, উত্তরাখণ্ড সাবর্ডিনেট সার্ভিস সিলেকশন কমিশনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিক্রির এই চক্র ডিসেম্বর থেকে দুর্নীতির কারবার চালাচ্ছে। স্কুলশিক্ষক, জেলা আদালতের কর্মী, ইঞ্জিনিয়ার, কোচিং ইনস্টিটিউট এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামার, সকলে মিলে কারবার চালাচ্ছে, একেবারেই মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির মতো। কেবল টাকা জমা দিলেই কেল্লাফতে। চলে আসছে প্রশ্নপত্র। পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে ভুয়ো পরীক্ষার্থী। সহজেই মিলছে প্রথম সারির র‌্যাঙ্ক।

স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের তদন্তে উঠে এসেছে, উত্তরাখণ্ডের এই চক্রটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মতো অন্য রাজ্যেও এই একইভাবে দুর্নীতির চক্র খুলেছে। দুর্নীতিবাজদের দাবি, শীর্ষস্তরের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও তাদের যোগাসাজস রয়েছে। ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে সে রাজ্যের বিরোধী দল। বিগত দু-দফা ধরে উত্তরখণ্ডে বিজেপির সরকার চলছে, এই গোটা সময়কালে সরকারি চাকরি এবং উচ্চশিক্ষায় ভর্তি সবই টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে হয়ে যাচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, সরকারের অজান্তে এত বৃহদাকারের দুর্নীতি হয় না। সরকারি চাকরি আর উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির মতো একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি কেন ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতেই বারবার দেখা যাচ্ছে? একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে কেন দুর্নীতির চক্র জাল বিস্তার করছে? সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Maharashtra, #Uttar Pradesh, #bjp, #Neet, #Haryana, #Scam, #Higher studies scam

আরো দেখুন