দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কেলেঙ্কারি চলছে, TMCP-র মঞ্চ থেকেই শাহী আক্রমণে অভিষেক
ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে, আজ ২৯ আগস্ট মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির কাছে করোনা পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতোই সভা আয়োজন করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেই মঞ্চ থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিজেপি তথা শাহ-মোদীর অশ্বমেধের ঘোড়া রুখে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ অভিযোগ আনেন, বাংলার মানুষ বিজেপিকে হারিয়েছে, তাই বংলাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিএসএফ, সিআইএসএফ নিয়েও অমিত শাহকে কটাক্ষ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিএসএফের নাকের ডগায় কয়লা, গরু চুরি হচ্ছে। এই পাচারের টাকা কি দিল্লিতে পৌঁছে যাচ্ছে? গরুপাচার আটকাতে ব্যর্থ কেন্দ্র। অপদার্থতা কার? তিনি বলেন, এটা কোনও পাচার বা কেলেঙ্কারি নয়। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কেলেঙ্কারি।
তিনি আরও বলেন, বাংলার পাওনা দিচ্ছে না মোদী সরকার। বিজেপি নেতারা বলছে, আর কেন্দ্র বাংলার পাওনা আটকে দিচ্ছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে বেইমান, গদ্দার বলেও আক্রমণ করেন অভিষেক। দিলীপ ঘোষকে গুন্ডা বলেও আক্রমণ করেন অভিষেক। বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে অভিষেক বলেন, আগে তৃণমূলের ছাত্র-যুব সংগঠনের সঙ্গে লড়াই করুন, তারা ১০ গোল দেবে। পরে মমতার সঙ্গে লড়ার কথা ভাববেন।
এদিনের মঞ্চ থেকেই জয় শাহর জাতীয় পতাকা বিতর্কে অমিত শাহের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ান অভিষেক। তার দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে হয়ে এমন কাজ করার জন্য উনি ছেলেকে ‘ত্যাজ্য পুত্র’ করুন। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, রবিবার এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের শেষে এক ভিডিওতে দেখা যায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহের দিকে তার পাশে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি জাতীয় পতাকা এগিয়ে দিচ্ছেন। জয় মাথা নাড়িয়ে তা নিতে প্রত্যাখ্যান করেন। ওই ভাইরাল ভিডিওকে নিয়েই আজও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন অভিষেক। তার কথায়, ‘‘অমিত শাহ, যিনি সারা ভারতবর্ষকে দেশপ্রেম শেখান, ঘর ঘর তিরঙ্গার কথা বলেন, সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পুত্র বলছেন, ভারতের পতাকা আমি হাতে ধরব না!’’ আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে অভিষেক বলেন, অমিত শাহকে নিজেকে ভাবেন কী? দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের রক্ষাকর্তা? ধারক ও বাহক? সেই সঙ্গেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, হৃদয়-বিবেক, মস্তিষ্কে যদি ভারতের প্রতি ন্যূনতম সম্মান থাকে, তা হলে আপনি(অমিত শাহ) হয় আপনার(জয় শাহ) পুত্রকে ত্যাজ্যপুত্র করবেন, নইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। যে কোনওদিন ব্যাট ধরেনি, বল করেনি সে কীভাবে বোর্ডের সচিব? প্রশ্ন তোলেন অভিষেক? অভিষেক অভিযোগ করেন, জয় শাহর কাছে দেশ আগে নয়। বরং পদ ও পরিবার আগে। দাবি করেন, কুলাঙ্গার ছেলেকে বরখাস্ত করুক বিসিসিআই।
অভিষেক বলেন, সারা দেশকে শেখাচ্ছেন দেশপ্রেম কী, আর ছেলে বলছেন, আমি জাতীয় পতাকা ধরব না! যে পতাকার জন্য হাজার হাজার দেশনায়ক প্রাণ দিয়েছেন, সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে কী বলছেন? এদের থেকে আমাদের জাতীয়তাবাদের শংসাপত্র নিতে হবে? বলেও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন অভিষেক। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পীঠস্থান যে বাংলা, তাও মনে করিয়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মোদীর পরিবারতন্ত্র খোঁচার জবাব জয় শাহের প্রসঙ্গ তোলেন তৃণমূল নেতা।