দৃষ্টিআকর্ষণ করতেই আইন অমান্য আন্দোলনকে হিংসাত্মক করে তুলেছিল CPI(M)?
রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে কেবল দৃষ্টিআকর্ষণের রাজনীতিকে হাতিয়ার করেছে সিপিআইএম। আইন অমান্য আন্দোলনকে হিংসাত্মক করে তোলাই ছিল তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের পরিকল্পনা করেছিল সিপিআই(এম) CPI(M)। সেই কারণেই গতকাল সিপিআই(এম) বেছে বেছে সরকারি সম্পত্তির উপরেই আক্রমণ করেছে। সাম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের ঐতিহাসিক কার্জনগেটে বিশ্ববাংলার লোগো লাগানো হয়েছিল। গতকাল সিপিআই(এম)-ইর লোকজন তারপর ভাঙচুর চালিয়ে তা উপরে দেয়। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প নিয়ে জনসাধারণ সচেতন করতে রাস্তার ধারে যেসব বোর্ড লাগানো হয়েছিল, সেগুলিও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুরে লন্ডভন্ড বোর্ডগুলিও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু সংখ্যক সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করেছে সিপিআই(এম) কর্মীরা। সরকারি দপ্তরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইট বৃষ্টিও চালিয়েছে সিপিআই(এম)। পুলিশের কোন প্ররোচনা ছাড়াই ইচ্ছাকৃতভাবে সিপিআই(এম) এমনটা করেছে।
আইন অমান্যের নামে সিপিআই(এম) ক্যাডাররা তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে। গতকাল দুদিক থেকেই জমায়েত হয়ে তারা ভাঙচুর চালায়, ইটের আঘাতে সরকারি সম্পত্তি ছাড়াও কার্জন গেটের কাছে একাধিক দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কার্জনগেটেও ইট ছোড়া হয়। শহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নানা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমজনতা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ। অনেকেই বলছেন, প্রচারে আসার জন্য সিপিআই(এম) পরিকল্পিতভাবে এই ভাঙচুর চালিয়েছে।
রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কথায়, সিপিআইএম CPI(M) ক্যাডাররা বহু সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছে। এর ক্ষতিপূরণ ওদের দিতে হবে। গতকাল বিডিএর চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, তার উপরেও হামলার চেষ্টা করা হয়। আন্দোলনের নামে পরিকল্পনামাফিক তাণ্ডব চালিয়েছে সিপিআই(এম)। নির্দিষ্ট করে সরকারি সম্পত্তিগুলিই ভাঙচুর করা হয়েছে। স্পষ্টত সিপিআই(এম) এখনও ধ্বংসাত্মক মনোভাব নিয়েই চলছে। মন্ত্রীর মতে, সিপিআই(এম) যত এসব কাজ করবে, ততই তারা মানুষের থেকে দূরে সরে যাবে।
প্রসঙ্গত, সিপিআই(এম)-এর আইন অমান্য কর্মসূচির জন্যে জেলার নানান প্রান্ত থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসা হয়েছিল। বেশ কিছুদিন ধরে তারা প্রচার করে কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ছাড়াও, জেলা নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। গন্ডগোলের আঁচ পুলিশ আগে থেকেই করেছিল। সেই আশঙ্কায় কার্জনগেটের কাছে একাধিক ব্যারিকেড় তৈরি করা হয়েছিল। জেলাশাসকের দপ্তরের দিকে এগিয়ে আসা রুখতে, বড় গেট তৈরি করে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছিল। সিপিআইএমের ক্যাডাররা সেখান থেকেই ইট, পাথর ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ জল কামান চালায়, কিন্তু তারপর আরও বেশি ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে সিপিআই(এম) ক্যাডাররা। হামলা চালাতে থাকে। অন্যদিক থেকে জেলাশাসকের দপ্তরে আসার চেষ্টা করে।
প্রথম থেকে সিপিআই(এম) ক্যাডারদের টার্গেট ছিল সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা। স্থানীয় বিধায়কের অফিসেও তারা ভাঙচুর চালিয়েছে। তৃণমূলের দাবি, পার্টি অফিস থেকে বেশকিছু সামগ্রী লুট করেছে সিপিআই(এম) ক্যাডাররা। পুলিশ সূত্রে খবর, কার্জনগেটে রাখা একাধিক সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, হামলা, মারধরসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।