সৌরভে সুরভিত দাদার মলাট
লর্ডসের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক বাঙালী তরুণ বনবন করে ঘোরাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি। তাঁর সঙ্গে আবেগে ভাসছে গোটা দেশ। তার পর পুরো দলকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে নেমে যাওয়া লর্ডসের মাঠে, তখন শুধুই ভারতরাজ। ভারতরাজ এক বঙ্গ সন্তানের হাত ধরে। ভারতীয় ক্রিকেটে মাঠে নেমে চোখে চোখ রেখে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের জবাব দেওয়ার মন্ত্র শিখিয়েছিলেন এক বাঙালী।
ভারতীয় ক্রিকেট মঞ্চের দাদাগিরি থেকে টেলিভিশন স্ক্রিনে ক্যামেরার সামনের আর এক দাদাগিরি। দেখলে মনে হবে এটাই তো তাঁর ময়দান। যেখানে স্ট্রেট ব্যাটে বাপি বাড়ি যা বলে যে কোনও বল পাঠিয়ে দিতে পারেন মাঠের বাইরে। সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে গৌতম ভট্টাচার্য সম্পাদিত পার্পল মুভি টাউনের নতুন বই ‘দাদা’।
এই সংস্থার কর্ণধার প্রীতিময় চক্রবর্তীর হঠাৎই এক দিন মনে হয়েছিল সৌরভকে নিয়ে বই বের করবেন। হাজির হয়েছিলেন সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্যের কাছে। তার পরেই হাতে গরম ১১২ পাতার ‘দাদা’।
তাঁকে নিয়ে যত বলা যায় ততই কম। তবুও এই বইয়ে অনেকের কলম থেকেই বেরিয়ে এসেছে সৌরভ সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য। সে বাংলা সিনেমা জগতের সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ই হোক বা ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে। ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল হোক বা কবি শ্রীজাত। যিনি এই সব কিছুকে এক মলাটে বেঁধেছেন সেই মানুষটি তো তাঁর দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে দেখেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্রিকেট জীবনের নানা ওঠাপড়া, সাফল্য, ব্যর্থতার কাহিনী। তিনি গৌতম ভট্টাচার্য।
রাহুল দ্রাবিড়, সচিন তেন্ডুলকর, সুনীল গাওস্কর, বীরেন্দ্র সহবাগ, কপিল দেব, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষ্মণ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা অল্প কথায় ব্যাখ্যা করেছেন দেশের সফলতম অধিনায়ককে। অফ সাইডের ঈশ্বর সম্পর্কে বলেছেন বয়কট, জন রাইট, স্টিভ ওয়রা। এই বই যেন একটুকরো সৌরভকে জেনে নেওয়ার উপাদান।
ক্রিকেটার সৌরভ থেকে ধারাভাষ্যকার সৌরভ। সঞ্চালক থেকে ক্রিকেট প্রশাসক। যেখানেই পা রেখেছেন সেখানেই সাফল্য। ঢুকে পড়েছেন সবার মনে।
(লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পত্রিকায়)