সোনা পাচারে নাম জড়াল পিনারাই বিজয়নের দপ্তরের, ঘোর অস্বস্তিতে বামেরা
৩০ কেজি সোনা পাচারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরগরম কেরালার রাজনীতি। আর এতে নাম জড়িয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেরই। যার জেরে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন তাঁর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি তথা তথ্য-প্রযুক্তি সচিব এম শিবশঙ্করকে অপসারণ করেছেন।
গত ৪ জুলাই তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে ৩০ কেজি সোনা আটক করে শুল্ক দপ্তর, যার বাজারে মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সৌদি আরব থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলে তিরুবনন্তপুরমে আসে ওই সোনা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিরুবনন্তপুরমে সৌদি আরবের দূতাবাসের প্রাক্তন জনসংযোগ আধিকারিক সরিৎ কুমারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে।
তবে, মূল অভিযুক্ত হিসেবে ওই ঘটনায় নাম উঠে এসেছে স্বপ্না সুরেশ নামে এক মহিলা অফিসারের। তিনি অবশ্য গা-ঢাকা দিয়েছেন, এখনও অধরা। ওই মহিলা অফিসারও তিরুবনন্তপুরমে সৌদি আরব দূতাবাসে আগে উচ্চপদে কাজ করেছেন। তিনি বর্তমানে কেএসআইএলটি-তে কর্মরত, এই সংস্থাই মুখ্যমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দেখভাল করে। শোনা যাচ্ছে, ওই সোনার কনসাইনমেন্টে স্বপ্না সুরেশের স্বার্থ জড়িত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এই স্বপ্না সুরেশের নামে আগেও পাচারের মতো অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তিনি ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বে ‘ছাড়’ পেয়ে যান বলে অভিযোগ। স্বপ্নাকে, শিবশঙ্কর নিয়োগ করেছিলেন বলে দাবি। তার ফলেই শিবশঙ্করকে অপসারণ করা হয়।
এই স্বপ্না সুরেশের সঙ্গে শিবশঙ্করের যোগসূত্রেই মু্খ্যমন্ত্রীর দপ্তরকে টেনে এনেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনায় প্রথম অভিযোগ তোলেন কেরলের বিজেপি রাজ্য সভাপতি কে সুন্দরন। সুন্দরনের অভিযোগ, ‘ওই মহিলাকে কেন সিএমও থেকে ফোন করে সুরক্ষা দেওয়ার দাবি করা হয়েছিল? তাঁর বিরুদ্ধে আগে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি উচ্চ পদে কর্মরত?’
ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন কেরলের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘সোনা পাচারের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। অভিযুক্তের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি সচিবের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস এবং তাঁর সচিব এই ঘটনায় জড়িত।’ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন, সৌদি আরবের কূটনৈতিক রক্ষাকবচের অপব্যবহার করা হয়েছে। প্রায় একই অভিযোগ তুলে ঘটনার নিন্দা করেছে সৌদি কনস্যুলেটও।
তবে বিজয়ন তাঁর অফিসের যুক্ত থাকার কথা মানেননি। সাংবাদিক বৈঠকে জানান, শুল্ক দপ্তর তদন্ত শুরু করেছে। কাউকে আড়াল করা হবে না। যথাযথ তদন্ত হবে ও অপরাধীরা শাস্তি পাবে।