নিয়ম মেনেও অমিল বরাদ্দ, মোদী সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বাংলা?
রাজ্যের শাসক দল তথা মুখ্যমন্ত্রী বাংলার প্রতি মোদী সরকারের বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছেন। এবার খোদ মোদী সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টেই মিলল সেই অভিযোগের প্রমাণ। কিছু অনিয়ম ও পদ্ধতিগত ত্রুটি দেখিয়ে বাংলায় গরিব মানুষের বাড়ি তৈরির বরাদ্দ আটকে রেখেছে মোদী সরকার। কিন্তু একই খামতি ও পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনা প্রকল্পের বরাদ্দ যথারীতি সময় মতোই পাচ্ছে একাধিক রাজ্য। বলাবাহুল্য তালিকায় একাধিক বিজেপি শাসিত একাধিক ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যও রয়েছে।
গুজরাত, মহারাষ্ট্রসহ মোট ২১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সোশ্যাল অডিট হয়নি। অন্যদিকে, অডিটের ক্ষেত্রে গোটা দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলা। বাংলার অভিযোগ, নিয়ম মাফিক প্রকল্পের সোশ্যাল অডিট না করেও বহু রাজ্য বরাদ্দ পেয়ে চলেছে। সেখানে অডিট করেও ওই একই প্রকল্পে চলতি অর্থ বছরে এক টাকাও পায়নি বাংলা। রাজ্যের দাবি, বাংলাকে কোণঠাসা করতে মোদী সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের সাফ অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি চক্রান্ত করেই কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীর কথায়, বাংলায় নিয়ম মানা হচ্ছে না, এ কথা কেউ বলতে পারবে না। কেন্দ্রের বরাদ্দ আটকে রাখার কোনও যৌক্তিকতাই নেই। তার অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাস প্রকল্পে ২ লক্ষ ১৮ হাজার ২১০টি ক্ষেত্রে সোশ্যাল অডিট হয়েছে। যার মধ্যে বাংলায় ১২ হাজার ৫৪৭টি অডিট হয়েছে। বাংলা দেশের মধ্যে চতুর্থ। উত্তরাখণ্ড, অসম, মিজোরাম, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং ওড়িশায় খুবই সামান্য পরিমাণে সোশ্যাল অডিট হয়েছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, কর্ণাটক, কেরল, পাঞ্জাব, সিকিম এবং তামিলনাড়ুতে একেবারেই তা হয়নি। আন্দামানসহ একাধিক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও প্রকল্পের সোশ্যাল অডিট হয়নি। রাজ্যের প্রশাসন বলছে, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য কেন্দ্রের কাছে জমা দেওয়া রয়েছে। কেন্দ্রের তথ্য বলছে, সোশ্যাল অডিটের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে খুব ভালো জায়গায় রয়েছে বাংলা। কিন্তু তারপরেই মিলছে বরাদ্দ। কেন্দ্রের তথ্য আর মোদী সরকারের আচরণ দ্বিমুখী কাজ করছে। স্পষ্টত ইঙ্গিত মিলছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে বাংলা।