আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট মিলছে না স্কুলে
লকডাউনে উত্তর দিনাজপুর জেলার অধিকাংশ স্কুলে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিডের ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে মিড-ডে মিলের চাল, আলু মিললেও অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে স্কুলে যে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিডের ট্যাবলেট দেওয়া হয় তা মিলছে না। সাধারণত পড়ুয়াদের সপ্তাহে একদিন করে মিড-ডে মিলের পর ওই ট্যাবলেট দেওয়ার কথা। কিন্তু লকডাউনে সরবরাহ না থাকায় ওই ট্যাবলেট পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছোয়নি বলে খবর।
তবে শিক্ষা বা স্বাস্থ্য দপ্তর, কেউই এর দায় নিতে চাইছে না। উত্তর দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, প্রধান শিক্ষকদের ছাত্রছাত্রীদের ওই ট্যাবলেট বিলি করার কথা। স্কুল বন্ধ থাকলেও মিড-ডে মিলের চাল ও আলু বিলির দিন মাসের ট্যাবলেট দিয়ে দিলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। শিক্ষা দপ্তরকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) দীপক ভক্ত বলেন, স্কুলগুলিতে যথাসময়ে ট্যাবলেট পৌঁছোনোর দায়িত্ব স্বাস্থ্য দপ্তরের। আদৌ স্কুলে তা পৌঁছোনো হয়েছিল কি না সেটা তারাই ভালো বলতে পারবে।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্যে ৫৫ শতাংশেরও বেশি পড়ুয়া অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতায় ভুগছে। আয়রন, ফলিক অ্যাসিড উপযুক্ত পরিমাণে শরীরে না যাওয়ায় তারা অপুষ্টিতে ভুগছে। এই রাজ্যে ২০১২ সাল থেকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সব স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মেয়েদের সপ্তাহে একটি করে খনিজ উপাদান সম্পন্ন ওই ট্যাবলেট খাওয়ানোর প্রকল্প শুরু হয়। পরে ছেলেমেয়ে সকলকেই এই ট্যাবলেট দেওয়া শুরু হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আয়রন ট্যাবলেট পড়ুয়াদের জন্য খুবই জরুরি। এই ওষুধ খেলে বাচ্চাদের দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, নিরুৎসাহী ভাব অনেকটাই কেটে যায়। তেমনই পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে ওঠে তারা। গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ বাচ্চাই অপুষ্টির শিকার। লকডাউন পর্বে ওই ওষুধ না মেলায় সমস্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরাও।
এদিকে শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা ওই ট্যাবলেট স্কুলে পৌঁছে দিতেন। লকডাউন শুরু হতেই স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। এছাড়া মাসের নির্দিষ্ট তিন, চারদিন স্কুল খোলা রেখে অভিভাবকদের চাল, আলু দেওয়া হয়। সেই দিনগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবে আয়রন ট্যাবলেট বিলির কাজ মার খেয়েছে। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নিরুপম দাস বলেন, কোথাও ট্যাবলেট দেওয়া না হয়ে থাকলে তা স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয়ে অভাবে সম্ভব হয়নি। জুলাই মাসের মিড-ডে মিলের চাল, আলু বিতরণের সময় একমাসের ট্যাবলেট পড়ুয়াদের সরবরাহ করতে বিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।