অন্নকূট উৎসব, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পাহাড় প্রমাণ নৈবেদ্য নিবেদন করার দিন
আজ অন্নকূট উৎসব, প্রতি বছর দীপাবলির পরের দিনই গোবর্ধন পুজো তথা অন্নকূট উৎসব পালন করা হয়। ২৫ অক্টোবর সূর্যগ্রহণ থাকায় আজ ২৬ অক্টোবর গোবর্ধন পুজো করা হবে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, এই তিথিতেই শ্রী কৃষ্ণ নিজের কনিষ্ঠ আঙুলে গোবর্ধন পর্বতকে তুলে ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকে বৃন্দাবনবাসীকে রক্ষা করেছিলেন। তারপর থেকেই গোবর্ধন পুজোর শুরু।
প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, দেবরাজ ইন্দ্রের অহংকার নাশ করার জন্যে শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতের পুজো আরম্ভ করেন, সেই সময় ইন্দ্র ক্রোধে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু করেন। বৃষ্টির জলে বৃন্দাবন প্লাবিত হতে শুরু করে। কৃষ্ণ বৃ্ন্দাবনবাসী গোবর্ধন পর্বতে নিয়ে যান ও কড়ে আঙুল দিয়ে সেই পর্বত তুলে ৭ দিন সকলকে সেখানে আশ্রয় দেন। ওই সময় সকলে নিজের সঙ্গে যে খাদ্যসামগ্রী এনেছিলেন, তাই সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়। কৃষ্ণের ওই খাবার পছন্দ হয়। পরবর্তীতে গোবর্ধনকে প্রসাদ হিসেবে অন্নকূটের ভোগ নিবেদন করা হত। কৃষ্ণই গোবর্ধন পুজোর পর অন্নকূট উৎসব পালনের প্রচলন করেন।
একাধিক অন্ন তথা শস্যের মিশ্রণ হল অন্নকূট। বিভিন্ন ধরনের ভোগ নিবেদন করে কৃষ্ণের পুজো করা হয়। অন্নকূটের সমস্ত প্রসাদ একসঙ্গে মিশিয়ে সকলকে দেওয়া হয়। বিভিন্ন সবজি দিয়ে তরকারি, ভাত, লুচি, রুটি, মুগ ডালের খিচুড়ি, বাজরার হালুয়া ইত্যাদি তৈরি করে নিবেদন করা হয়। কোনও কোনও স্থানে আবার মুগডাল ও বাজরার খিচুড়ির ভোগ নিবেদন করা হয়। আবার বিভিন্নস্থানে কৃষ্ণকে ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়। গোবর্ধন পুজোর দিনে সকালে কৃষ্ণের অভিষেক করা হয়। তারপর বাড়িতে বাড়িতে বিভিন্ন ব্যঞ্জন তৈরি করে তার ভোগ নিবেদন করা হয়। অন্নকূট মানেই খাবারের পাহাড়, উপাচার অন্নের পাহাড়ের রূপ ধারণ করে। মূলত নিরামিষ খাবার প্রস্তুত করা হয়। স্তরে স্তরে সাজিয়ে দেবতাদের নিবেদন করা হয়। নৈবেদ্যতে হরেক রকমের সুস্বাদু মিষ্টি, পাশাপাশি শাক-সবজি, ডাল, ভাজা সুস্বাদু খাবার থাকে।