গন্ধহীনতা হতে পারে অ্যানোসমিয়ার লক্ষণ! জানুন বাঁচার উপায়

এমন কাণ্ড আপনার সঙ্গেও ঘটলে ডাক্তারদের পরামর্শ, শিগগিরই করোনার পরীক্ষা করান

July 10, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

গন্ধহীনতা আদতে এক ধরনের রোগ। এর নাম অ্যানোসমিয়া (Anosmia)। এই রোগে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেন। এমন কাণ্ড আপনার সঙ্গেও ঘটলে ডাক্তারদের পরামর্শ, শিগগিরই করোনার পরীক্ষা করান। বিশেষজ্ঞদের দাবি, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি আর ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের অনেকেই ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। তবে এ থেকে নিস্তারের উপায়ও রয়েছে।

এক নজরে দেখে নিন বিস্তারিত তথ্য

​কেন হয় এমনটা?

আমরা নাকে ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই অলফেক্টরি নামক একটি নার্ভের মাধ্যমে। এটি আমাদের নাকের উপরি অংশে ছড়ানো রয়েছে। যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। কোনও কারণে এই নার্ভটি অকার্যকর হয়ে গেলে আমরা ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই না। আর ঘ্রাণ না পেলে আমাদের জিহ্বার টেস্ট বাড যা স্বাদ পেতে সাহায্য করে, তা-ও অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে একই সাথে নাকে ঘ্রাণ না পেলে মুখে স্বাদও পাই না।

স্বাদহীনতা আসলে?

এর পোশাকি নাম অ্যাগিউসিয়া (Ageusia)। এই ধরনের রোগাক্রান্ত হলে স্বাদকোরকের কোনও সেন্স থাকে না। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির শ্বাসযন্ত্রকে সম্পূর্ণ ভাবে বিকল করে দেয় অতিমারি এই ভাইরাস। ফলে তীব্র শ্বাসকষ্টের কারণে গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা পুরোপুরি চলে যায়। আর যেমন গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা চলে যায় , তেমনই আবার স্বাদহীনও হয় তা।

কোন কোন ক্ষেত্রে এই দুই রোগের সম্ভাবনা বেশি?

ঠান্ডা লাগা, অ্যালার্জি, নাকের ভিতরে বা সাইনাসে পলিপাস হয়ে নাকের ছিদ্র বন্ধ থাকলে। কিছু ওষুধ খেলে, যেমন- এজিথ্রোমাইসিন, এমপিসিলিন, জিটিএন, ক্যাপট্রোপিল ইত্যাদি কারণে। এছাড়াও জীবাণুনাশক ওষুষের সংস্পর্শে এলে, মাথায় আঘাত পেলে। নেশা জাতীয় দ্রব্য নাক দিয়ে গ্রহণ করা, যেমন- কোকেন, হিরোইন, ইয়াবা প্রভৃতি সেবন করলেও দেখা দিতে পারে এই দুই রোগ। করোনাভাইরাস ছাড়াও আলঝেইমার, পারকিনসন ডিসিজ ইত্যাদি রোগের কারণেও অ্যাগিউসিয়া এবং অ্যানোসমিয়া আক্রান্ত হতে পারেন

এসবের যদি কোনওটাই না দেখা যায় –

এখনও খাবারের গন্ধ পাচ্ছেন না বা বেস্বাদ লাগছে খাবার, তবে সেক্ষেত্রে আপনার অতি অবশ্যই করোনার টেস্ট করা উচিত। তার আগে নিজেকে এবং পরিবারের বাকিদের আইসোলেশনে রাখুন।

টেস্ট যদি একান্তই না করতে পারেন, তাহলে যা যা করণীয় –

পরের সব লক্ষণগুলির পরও যদি শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, বুকে চাপ অনুভূত হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আর সে রকম গুরুতর কিছু না হলে, ঘরে আলাদা নিজেকে বন্দি করে রাখতে হবে, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, ঈষৎ-উষ্ণ জল পান করতে হবে, যত বার সম্ভব নাক পরিষ্কার করতে হবে, দিনে কমপক্ষে পাঁচ বার গরম জলে সেঁক করতে হবে, গরম জলের ভাপও নিতে হবে অন্ততপক্ষে পাঁচ বার। এছাড়াও বিভিন্ন সুগন্ধির স্টিমুলেশনও নেওয়া যেতে পারে।

ঘ্রাণশক্তি এবং স্বাদ ফিরে পাওয়ার সহজ উপায় –

গোলাপ, ইউক্যালিপটাস, লবঙ্গ,ও লেবুর ফুলের গন্ধ। এগুলোর গন্ধ শুকলে দ্রুত খাবারের গন্ধ বুঝতে পারবেন। এই ফুলগুলো না পাওয়া গেলে এগুলোর নির্যাস অ্যাসেন্সিয়াল অয়েলের গন্ধ শুকে দেখতে পারেন। আর এই ঘ্রাণশক্তি এক সপ্তাহ থেকে দুই মাসের মধ্যেই ফিরে আসে। এর জন্য আলাদা করে কোনও ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen