রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

CPM-ও কি এবার গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করতে চলেছে! জল্পনা পাহাড়ে

January 17, 2023 | 2 min read

আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত হতে চলেছে পাহাড়! সিপিএম’ও কি এবার গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করছে, রবিবারের পর থেকে এই প্রশ্নগুলি নতুন করে ঘুরপাক খাচ্ছে পাহাড়ে।

কারণ, রবিবার দার্জিলিং-এর ক্যাপিটাল হলে একই মঞ্চে দেখা গেল বিমল গুরুং, বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ড এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক সমন পাঠককে। সেই সভাতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবি ওঠে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পৃথক গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বলেছিলেন, ওরা পৃথক গোর্খাল্যান্ড চায়। আমরা বাংলা ভাগ চাই না। এক ছিলাম, এক থাকব। বুদ্ধদেবের সময় থেকেই পাহাড়ে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনকে নতুন করে সংগঠিত করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিমল গুরুং। আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন রোশন গিরি ও বিনয় তামাংরা। গুরুং দের আন্দোলনের চাপে সেই সময় যেমন মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বাম নেতারা পাহাড়ে যেতে পারেননি, তেমনই পাহাড় ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন জিএনএলএফ সুপ্রিমো সুবাস ঘিসিং, শান্তা ছেত্রীরা।

পরবর্তীতে পাহাড়ে চলে রাজনৈতিক পালাবদল। কখনও বিমল গুরুংকে সরিয়ে পাহাড়ের রাশ চলে যায় বিনয় তামাংয়ের হাতে কখনও বা অনিত থাপার হাতে। দীর্ঘদিন অজ্ঞাতবাসে থেকে ফের পাহাড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিমল গুরুং। বর্তমানে পাহাড়ের ক্ষমতা রয়েছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনিত থাপার হাতে। এবার তার বিরুদ্ধেই জোটবদ্ধ হয়েছেন বিমল গুরুং, বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ড। রবিবারের সভাতে একই মঞ্চে দেখা গেল সিপিএমের জেলা সম্পাদক সমন পাঠককে। এই সভায় বিপরীত মেরুতে থাকা সিপিএমের যাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

জানাগেছে, এদিনের ক্যাপিটাল হলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিমল গুরুং বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ড গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে সওয়াল করেন। এদিন বিমল গুরুং বলেন ‘গোর্খাদের স্বার্থে পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের প্রয়োজন। ওই দাবিতে আমরা আন্দোলন করব। তবে হিংসাত্মক আন্দোলন হবে না।’ হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘বুদ্ধিভিত্তিক গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন করতে হবে। আমরা শুনতে পাচ্ছি উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য হবে। তাতে পাহাড়ের ক্ষতি হবে।’ বিনয় তামাং বলেন, ‘গোর্খাদের সম্মান রক্ষার্থে আমাদের এই সংগ্রাম। আমরা চাই গোর্খারা আত্মসম্মানের সঙ্গে বাঁচুক।’‌

মঞ্চের গোর্খা নেতারা যখন পৃথক রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করছেন, তখন একই মঞ্চে থাকা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সমন পাঠকের থাকা কি পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ? এই প্রসঙ্গে সমন পাঠক বলেন, ‘গোর্খাল্যান্ড পাহাড়ের মানুষের আবেগ। এই আবেগকে সম্মান করি। তবে রাজ্য ভাগ নয়, তাঁরা চান রাজ্যের ভিতরে থেকে সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসন। কারণ রাজ্য ভেঙে ছোট রাজ্য গড়লে কেন্দ্র রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়, রাজ্যবাসির হয়না। আমাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল পুরবোর্ড দখলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য। আমি তাই গিয়েছিলাম।’

সোমবার পুরসভার বোর্ড গঠন। তাই রবিবার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা। তিনি বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড নয়, পুরবোর্ড বাঁচাতেই ওদের এই জোট। পুরসভায় চেঁচিয়ে কিংবা আমাকে গালি দিয়ে যদি গোর্খাল্যান্ড পাওয়া যেত তা হলে সমস্যাই থাকত না। আমরা বোর্ড গঠন করছি পাহাড়ের উন্নয়নের স্বার্থে। ওদের জোটকে নিয়ে চিন্তাও করছি না।’’

তবে রবিবার ক্যাপিটাল হলের বৈঠকে সমন পাঠকের উপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Gorkhaland, #Cpim

আরো দেখুন