দেশ বিভাগে ফিরে যান

লাদাখে ক্রমশ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ, এবার সরব হয়েছেন সোনম ওয়াংচুক

January 23, 2023 | 2 min read

২০১৯ সালে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু উন্নতির পরিবর্তে দেখা যাচ্ছে এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত লাদাখের মানুষ। এবার এই বিষয়ে সরব হলেন বাস্তবের ‘ফুংসুক ওয়াংডু’ সোনম ওয়াংচুক। তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করে অভিযোগ করেছেন, রাজনীতি থেকে সরকারি প্রকল্প- একাধিক কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে লাদাখের প্রকৃতি ও সাধারণ মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরেই লাদাখের মানুষ দাবি করেছেন, পূর্ণ রাজ্য হিসাবে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেওয়া হোক তাঁদের। রাজ্যের স্বীকৃতি না হলেও, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবিতে সরব লাদাখের মানুষ। প্রকাশিত ভিডিওতে এই বিষয়টিই তুলে ধরেছেন সোনম। তাঁর মতে, লাদাখ সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্তের কারণে ক্রমেই ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এই এলাকা। নীতি নির্ধারণে যদি এইভাবে গাফিলতি হতে থাকে, তাহলে লাদাখের দুই-তৃতীয়াংশ হিমবাহ গলে যাবে। মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার ফলে দ্রুত গতিতে গলছে হিমবাহ, এমনটাই জানা গিয়েছে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায়।

এহেন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর কাছে সোনমের আবেদন, লাদাখে অত্যধিক শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। তার ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা বাড়ছে। আপাতত মানুষের জীবিকার সুবিধা হলেও কয়েকদিনের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে গোটা লাদাখ। তাই লাদাখ-সহ হিমালয়ের অন্যান্য অঞ্চলকে রক্ষা করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর। ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে সাফ বার্তা দিয়ে সোনম জানিয়েছেন, “আপনি হস্তক্ষেপ করুন। সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী লাদাখের প্রকৃতিকে বাঁচান।” ২৬ জানুয়ারি থেকে পাঁচ দিনের জন্য ধরনায় বসার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। মাইনাস ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এই ধরনা চলবে।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাশ্মীর নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নতুন বছরের শুরুতেই প্রশ্নের মুখে অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকা। জম্মুতে বেছে বেছে হিন্দুদের হত্যা আটকাতে ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

সম্প্রতি কাশ্মীরে হিন্দু পণ্ডিত ও শিখেদের বেছে বেছে হত্যার একাধিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশ। এ বার উপত্যকার সীমা পেরিয়ে হিন্দু অধ্যুষিত জম্মুর রাজৌরি এলাকায় হামলা চালাল জঙ্গিরা। নতুন বছররে একদম শুরুতে জঙ্গিরা রাজৌরির ডাংরি এলাকায় একটি বাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালালে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের।

ফলে কাশ্মীর তো বটেই, জম্মুও যে আর পণ্ডিতরা নিরাপদ নয় তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আতশকাচের সামনে গোয়েন্দা বাহিনীর ভূমিকাও। বিরোধীদের মতে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ইতি ঘটবে বলে সংসদে দাবি করেছিলেন অমিত শাহ। তা তো হয়নি, উল্টে জঙ্গিরা উপত্যকার সীমা ছাড়িয়ে এখন জম্মুতে হামলা চালাচ্ছে।

এরই মধ্যে বাড়তি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে লাদাখ। বৌদ্ধ ও শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত এই নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য গড়া কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন লাদাখের সর্বদলীয় নেতারা।

শুধু তা-ই নয়, লাদাখের নেতারা এখন প্রকাশ্যে বলছেন, অবিভক্ত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে তাঁরা অনেক বেশি ভালো ছিলেন। বিজেপি সরকার তাঁদের ঠকিয়েছে, বোকা বানাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে সোনম ওয়াংচুক-এর ভিডিও বার্তা মোদী সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তুলেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই রাজনৈতিক মহলের। সোনমের ধরনার বিষয়টি কেন্দ্র এখন কী ভাব সামলায় সেটাই দেখার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#PM Modi, #Sonam Wangchuk, #ladakh

আরো দেখুন