এবার নজর সমবায়ে, গ্রাম-বাংলার অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চান মোদী-শাহ?
রাজ্যের শাসক দল থেকে শুরু করে কৃতী বঙ্গ সন্তানদের অভিযোগ, মোদী সরকার লাগাতার বাংলাকে নানাভাবে বঞ্চিত করে যাচ্ছে। মোদী সরকারের কর্মকান্ড প্রমাণ করে এ অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। দীর্ঘদিন ধরে বাংলার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ চালাচ্ছে মোদী সরকার। একুশের হারের পর থেকে তার মাত্রা সময়ের সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পঞ্চায়েত দপ্তরের মাধ্যমে চলা ১০০ দিনের কাজ, আবাস প্রকল্পের টাকা বহু দিন ধরেই বন্ধ রেখেছে মোদী সরকার। এবার বাংলার সমবায়ের কাজে নজর মোদী সরকারের। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি বাংলাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করার ছক কষেছে মোদী সরকার?
গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি হল সমবায়, বাংলাও এর ব্যতিক্রম নয়। স্বশাসিত সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলির মাধ্যমে সারা বছর ধরে কৃষকদের ঋণ প্রদানের কর্মকাণ্ড চলে। এবার তাতেও নাক গলাতে শুরু করেছে মোদী সরকার, এমনই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। খবর মিলেছে, সমিতিগুলির আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত হিসেব ও অডিট সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে অমিত শাহের সমবায় মন্ত্রক। যদিও বাংলার সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের দাবি, বাংলায় সমবায়ের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে, নিয়ম মেনে হয়। চেষ্টা করলেও বাংলাকে বিপাকে ফেলতে পারবে না, মোদী-শাহরা।
বাংলায় এখন প্রায় ৬,০০০ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি রয়েছে। গ্রামীণ উন্নয়ন এবং গ্রাম বাংলার কৃষিকাজকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সমবায়। বিশেষজ্ঞদের মত, সমবায়ের কাজকর্ম আংশিক বন্ধ করতে পারলেও, গ্রামীণ অর্থনীতি বিপদে পড়বে। তবে কি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলাকে এভাবেই প্যাঁচে ফেলার ফন্দি এঁটেছে গেরুয়া শিবির? খবর পাওয়া যাচ্ছে, সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলির তথ্য একটি পোর্টালে তুলতে নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকার। গ্রামীণ এলাকার মানুষের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য। কিছু বছর আগেও বাংলার প্রায় ৭১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও ব্যাঙ্কের পরিষেবা ছিল না। সেই এলাকাগুলিসহ বাংলায় ২,৬৩১টি কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট তৈরি করেছে রাজ্য। যা গোটা দেশে সর্বাধিক। এই কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টগুলির মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং সুবিধা পায় বাংলার মানুষ। এই চলতি অর্থবর্ষে সমবায় ক্ষেত্রে বাজেট বাড়িয়ে ৫৭২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কৃষির পাশাপাশি পশুপালনেও সাহায্য করে সমবায়, ইতিমধ্যে রাজ্যের এক লক্ষ পরিবারকে পশুপালন ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করতে ১৮০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলি। কিষান ক্রেডিট কার্ড, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে, কৃষক, মৎসজীবীরাও উপকৃত হচ্ছেন। কিন্তু পঞ্চায়েতের আগে গোটা ব্যাপারটিকে কেন থামিয়ে দিতে চাইছে মোদী সরকার? এখানেই প্রশ্ন উঠছে, প্রতিহিংসার রাজনীতি করে গ্রাম বাংলাকে আঁধারে ডোবাতে চাইছে মোদী-শাহ?