ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি, মোর্চাকে সামনে রেখে পুরোনো অস্ত্রে শান BJP-র

জিজেএমের কাঁধে বন্দুক রেখে বাংলা ভাগে হাওয়া তুলতে চাইছে বিজেপি।

January 28, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ফের শুরু হল পাহাড়কে বাংলা থেকে আলাদা করার ফন্দি আঁটা। গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) চুক্তি থেকে নিজেদের আলাদা করার কথা ঘোষণা করেছে বিমল গুরুং ও তার দলবল। তবে এই মুহূর্তে পাহাড়ের রাজনীতিতে ব্রাত্যই বলা যায় গুরুঙের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে। আর সেই কারণেই পাহাড়ের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক থাকতেই হয়ত এমন পদক্ষেপ করল তারা, এমনটাই মত রাজনৈতিক কারবারিদের। গুরুংরা সাফ ঘোষণা করেছে, এবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দিল্লিতে তারা আন্দোলনে নামবেন। কারণ, পাহাড়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও, কিছুই করেনি মোদী সরকার। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আবারও পৃথক রাজ্যের হাওয়া তুলে পাহাড়ে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি এবং তাদের দোসররা। গত লোকসভা নির্বাচনের মতো এবারেও গেরুয়া নেতারা পাহাড়ের ‘পার্মানেন্ট পলিটিক্যাল সলিউশন’ (পিপিএস) এবং ১১টি জনজাতিকে তফসিলি উপজাতি স্টেটাস দেওয়ার দেদার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। জিজেএমের কাঁধে বন্দুক রেখে বাংলা ভাগে হাওয়া তুলতে চাইছে বিজেপি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৮ জুলাই পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কেন্দ্র, রাজ্য এবং জিজেএমের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল। যা জিটিএ চুক্তি নামে পরিচিত। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পক্ষ থেকে রোশন গিরি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, তারা জিটিএ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি। গুরুংদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টিও। রোশনের দাবি, জিটিএ নাকি কিছুই করতে পারেনি। তারা বলছেন, গত ১১ বছরে নাকি তাদের কোনও দাবি পূরণ হয়নি। সেই কারণ, তারা জিটিএ থেকে বেরিয়ে এসেছি। জানা গিয়েছে, চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই জিজেএম রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে।

যদিও অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং তৃণমূল কংগ্রেস, নিজেদের অবস্থানে অনড়। প্রসঙ্গত, বিগত বছরের জুন মাসে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জিটিএর নতুন বোর্ড গঠন করেছে বিজিপিএম। চেয়ারম্যান হয়েছেন অনীত। অনীতের নেতৃত্বে পাহাড়ে শান্তি এসেছে, শুরু হয়েছে উন্নয়ন। জিটিএ নির্বাচনে বিজেপি, গুরুং, জিএনএলএফ এবং বিনয় তামাংদের কার্যত রাজনৈতিকভাবে মুছে দিয়েছেন পাহাড়ের মানুষ। ইতিমধ্যেই পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এক কথায় নির্বাচনী আবহে আবারও গোর্খাল্যান্ডের হাওয়া তুলতে চাইছে মোর্চা, একে প্রাক নির্বাচনী কৌশল রূপেই দেখছেন অনীত থাপারা। খবর মিলেছে, আজ শনিবার শিলিগুড়ির পিনটেল ভিলেজে সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন জিটিএ প্রধান।

পাহাড়ের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা জিটিএর কো-অর্ডিনেটর বিন্নি শর্মার কথায়, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে বিজেপি বলেছিল, পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। একই সঙ্গে বলা হয়েছিল, গুরুং, মাঙ্গার, রাই, ছেত্রী, নেওয়ারের মতো ১১টি জনজাতিকে এসটি স্টেটাস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর চার বছর কেটে গেলেও কোনও উদ্যোগ নেয়নি বিজেপি। এখন লোকসভা নির্বাচন আসতেই, ফের একই পথে পাহাড় জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। সেই কাজে মোর্চাকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে নেমে পড়েছে বিজেপি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen