বোসের মধ্যে ধনখড়-সুলভ রাজ্যপাল না পেয়ে শঙ্কিত রাজ্য BJP, ছড়াল গুজব?
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস শুক্রবার নয়াদিল্লিতে এসেছিলেন রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানের পর। নিন্দুকেরা নিন্দা করছে সেই আবহে নাকি স্বভাবতই শঙ্কিত রাজ্য বিজেপি নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে গুজব চাউর করে দিয়েছিল যে রাজ্যপালকে দিল্লিতে “তলব করা হয়েছে” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য। সেই গুজবে ও শোনা যাচ্ছে যে রাজ্যপাল বোস দিল্লিতে কোনও বিজেপি নেতার পরিবারের একটি বিয়েতে যোগ দিতে গেছিলেন এবং দিনের বেলা তিনি একটি বাংলা স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
এই গুজবের সূত্রপাত কোথায়? রাজ্য বিজেপির সূত্র থেকে শোনা গেছে যে রাজ্যপালকে দিল্লিতে তলব করার বিষয়টি বিজেপির রাজ্য ইউনিটে “গভীরতর মতপার্থক্য” প্রতিফলিত করে। বঙ্গ বিজেপির একটি অংশ রাজ্যপাল বোসের পূর্বসূরি জগদীপ ধনখড়কে, যিনি বর্তমানে ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট, বন্ধুসম রূপে পেয়েছিল এবং তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) নেতৃত্বাধীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চালিয়েছিল। অন্যদিকে শাসক দলের প্রতি নতুন রাজ্যপালের বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান তীরের মতো বিঁধেছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের।
৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজভবনে বাংলা শেখার প্রয়াসে, “হাতে খড়ি” অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন রাজ্যপাল। বাঙালী পরিবারগুলিতে, একটি শিশুর শিক্ষার আনুষ্ঠানিক সূচনাকে চিহ্নিত করার জন্য এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও বিরোধীদলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী তা বয়কট করেন। তার দলের সহকর্মী দিলীপ ঘোষ, যিনি বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি এবং রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তও এই অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেন।
সেদিন সন্ধ্যাতেই দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যপালের। তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজ্যবিজেপির কিছু নেতা নাকি গুজব ছড়ান যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মাখামাখি করার জন্য দিল্লিতে তলব করা হয়েছে রাজ্যপালকে। জানা যাচ্ছে যে বঙ্গবিজেপির কিছু নেতা রাজ্যপাল বোসের কাজকর্মে গুরুতর আপত্তি তুলেছেন, আবার অন্যরা মনে করেন যে তার পদক্ষেপে দিল্লির সমর্থন রয়েছে। রাজ্য ইউনিটের অনেকেই চান যে রাজ্যপাল ধনখড়ের মতোই তৃণমূলের বিরুদ্ধে যান।
দিল্লিতে বিজেপি সূত্র জানিয়েছে যে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বোসের দিল্লি সফরের গুজব সম্পর্কে বাতাস পরিষ্কার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। দলের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা বলেছেন যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত রাজ্যপালের কাছে কোনও আপত্তি জানায়নি।