করোনা নয়, বিজেপির লক্ষ্য দল ভাঙানো, অভিযোগ কংগ্রেসের
চার মাস আগের কথা।
গত মার্চ মাসের ১৫ তারিখ। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবে মাত্র ১০০ পেরিয়েছে। তখনও দেশে জুড়ে লকডাউন জারি হয়নি। বিদেশ থেকে বিমান আসছে নিয়মিত। দিল্লিতে সংসদের অধিবেশন রমরমিয়ে চলছে। মধ্যপ্রদেশে কমল নাথ সরকারের গদি টালমাটাল। কংগ্রেসের বিধায়কদের ভাঙিয়ে কমল নাথ সরকার ফেলার চেষ্টায় ব্যস্ত বিজেপি।
চার মাস পরে।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাপিয়ে গেল। এখন বিজেপি নেতৃত্ব রাজস্থানে অশোক গহলৌতের সরকার ফেলার চেষ্টায় সক্রিয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা টাকা দিয়ে সচিন পাইলট-সহ কংগ্রেস বিধায়কদের কেনার চেষ্টা করছিলেন কি না, তা নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে।
কংগ্রেসের প্রশ্ন, নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপির অগ্রাধিকার কী? আজ এআইসিসি-র সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপালের অভিযোগ, “যখন অতিমারিতে মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন, হাজার হাজার লোক মারা যাচ্ছেন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ছে, তখন কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের অগ্রাধিকার হল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়া!”
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দলবল সমেত বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে মধ্যপ্রদেশে আর সরকার টিকিয়ে রাখা যাবে না বুঝতে পেরে ১৬ মার্চ পদত্যাগ করেন কমল নাথ। বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহান ২৩ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। সে দিনই তড়িঘড়ি সংসদের অধিবেশনে ইতি টেনে পরের দিন থেকে লকডাউন ঘোষণা হয়ে গেল। কমল নাথ সে সময়ই অভিযোগ তুলেছিলেন, রাহুল গাঁধী ফেব্রুয়ারিতে করোনা নিয়ে সতর্ক করলেও বিজেপি মধ্যপ্রদেশের সরকার ফেলার জন্য লকডাউন জারি করেনি। করোনা সংক্রমণ রুখতে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা অধিবেশন মুলতুবি করে দিলেও আদালতে তার যৌক্তিকতা নেই বোঝাতে সংসদের অধিবেশন চালু রেখেছিল।
আজ বেণুগোপাল বলেন, “রাজস্থানে বিজেপি এমন এক সরকারকে ফেলার চেষ্টা করছে, যে সরকার কোভিডের মোকাবিলায় খুবই ভাল কাজ করছে। বিজেপি সক্রিয়তার ফলে গোটা রাজ্যের কোভিড মোকাবিলায় প্রস্তুতি বেলাইন হয়ে যাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশেও বিজেপি একই কাজ করেছিল।”
বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করছে। রাজস্থানের বিজেপি সভাপতি সতীশ পুনিয়ার দাবি, মরু-রাজ্যে অশোক গহলৌতের সরকারের সঙ্কটের সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। সবটাই কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল। বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী এ জন্য রাহুল গাঁধীকে দুষে বলছেন, মধ্যপ্রদেশ হোক বা রাজস্থান, সরকার পতনের কারণ রাহুল গাঁধীর ঈর্ষা। রাহুল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সচিন পাইলটদের হিংসা করেন। দলের সবাইকে অপমান করেন।
বেণুগোপালের পাল্টা যুক্তি, বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে কংগ্রেসের বিধায়কদের কথাবার্তার অডিয়ো টেপ থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচা করছিল। তাঁর প্রশ্ন, “বিজেপি সরকারের কাছে গরিবদের জন্য টাকা নেই। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী কেনার টাকা নেই। কিন্তু বিজেপির কাছে সরকার ফেলার জন্য টাকার অভাব নেই! এত টাকা আসে কোথা থেকে?”