ফিরছে এল নিনো: আশঙ্কা পৃথিবী জুড়ে, বিষয়টা কী?

এল নিনোর জেরে ঠান্ডা জল কোনওভাবেই ভৌম তলে আসতে পারে না।

February 20, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ফের ফিরছে এল নিনো। চার বছর পরে ফিরে আসছে এল নিনো। আর তার জেরে গোটা বিশ্বের তাপমাত্রায় বড় পরিবর্তন হতে পারে। এমনই আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থাগুলির পূর্বাভাস, ফের ফিরতে চলেছে এল নিনো। বিশেষ এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টি কম হওয়ার পাশাপাশি উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রবণতা থাকে। তাই বৃষ্টির সম্ভাব্য মাত্রা নিয়ে দোলাচল তৈরি হয়েছে।


আমেরিকার ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, এল নিনো আসতে চলেছে। আগে মনে করা হচ্ছিল, আগস্ট মাস নাগাদ এল নিনো পরিস্থিতি তৈরি হবে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে জুন মাস নাগাদ তা হতে পারে। ওই মাস থেকেই ভারতে বর্ষাকাল শুরু বলে বৃষ্টি কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।


এল নিনো কী?

পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরেরে পেরু ইকুয়েডর উপকূল বরাবর কোনো কোনো বছর ডিসেম্বর মাসে যে এক প্রকার দক্ষিণ মুখী উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়, তাকে এল নিনো বলা হয়ে থাকে। এল নিনো একটি স্পানীস শব্দ যার অর্থ ছোট্ট বালক বা যীশুর সন্তান। এটি প্রতি ২ থেকে ১০ বছর অন্তর এবং গড়ে প্রায় ৪ বছর অন্তর এল নিনোর আবির্ভাব হয়ে থাকে। এই উষ্ণ এল নিনোর আগমনের ফলে শীতল উত্তর মুখী পেরু স্রোতের ঊর্ধ্বগমন বাঁধা প্রাপ্ত হয়। যার ফলে সেই অঞ্চলের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হয়, উদ্ভিদ প্লাংটনের পরিমান হ্রাস পায় বলে মাছের উৎপাদন কমে যায়, যার ফলে পেরু, ইকুয়েডর ও উত্তর চিলির উৎস শিকারিরা অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়। উষ্ণ স্রোতের প্রভাবের ফলে সেই অঞ্চলের জলবায়ুর পরিবর্তন হয় এবং এই পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে প্রচুর পাখি ও অন্যান্য অনেক ছোট বড়ো প্রানী মারা যায়।

এল নিনো হলে আবহাওয়ার কী পরিবর্তন হয়?
এল নিনোর জেরে ঠান্ডা জল কোনওভাবেই ভৌম তলে আসতে পারে না। এর জেরে জল অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে যায়।

এল নিনোর প্রভাবে ঠিক কী হতে পারে?
উষ্ণ জল মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলে। গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হতে শুরু করে। আবার তার বিপরীত ঘটনাটিও রয়েছে। এল নিনোর প্রভাবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষি এশিয়ার একাংশে প্রচন্ড খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রশান্ত মহাসাগরে সাইক্লোন ও টাইফুনের প্রবনতাও বাড়িয়ে দেয় এই এল নিনো।

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশ দাস জানিয়েছেন, আমেরিকার আবহাওয়া সংস্থার এল নিনো সংক্রান্ত পূর্বাভাস তাঁদের নজরে এসেছে। তাঁর কথায়, শুধু এল নিনো বা লা নিনা নয়, ইন্ডিয়ান ওসান ডাইপোলও দেশে বর্ষার মতিগতির উপর প্রভাব ফেলে। ভারত মহাসাগরের জলের উষ্ণতার ভিত্তিতে ওই পরিস্থিতি নির্ধারণ হয়। সব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই সাধারণত এপ্রিল নাগাদ কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর বর্ষার দীর্ঘকালীন পূর্বাভাস জারি করে। এবার ততদিনে এল নিনো পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত জানা যাবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen