PTI, UNI-দের বয়কট করে সংবাদ পরিবেশনে পুরোপুরি গেরুয়া নিয়ন্ত্রণ?

১৯৪৮ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক তথা সঙ্ঘের নেতা শিবরাম শঙ্কর আপ্তে এবং সঙ্ঘের উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রবক্তা এমএস গোলওয়ালকর যৌথভাবে হিন্দুস্থান সমাচার তৈরি করেছিলেন।

February 28, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পিটিআই, ইউএনআইয়ের মতো সংবাদ সংস্থাকে বয়কট করা হল। এবার থেকে দূরদর্শন ও আকাশবাণীতে খবর সরবরাহ করবে সঙ্ঘের হিন্দুস্থান সমাচার। চলতি মাসের ১৪ তারিখ প্রসার ভারতী হিন্দুস্থান সমাচারের সঙ্গে ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চুক্তি করেছে। উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক তথা সঙ্ঘের নেতা শিবরাম শঙ্কর আপ্তে এবং সঙ্ঘের উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রবক্তা এমএস গোলওয়ালকর যৌথভাবে হিন্দুস্থান সমাচার তৈরি করেছিলেন।

মোদী সরকার দেশের প্রাচীন তথা বৃহত্তম সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের সঙ্গে ২০১৬ সাল থেকে সংঘাতে জড়িয়েছে। মুখ্য সম্পাদক পদে পছন্দের ব্যক্তিকে বসানোর চেষ্টাও করেছে বিজেপি। যদিও পিটিআইয়ের পরিচালন পর্ষদ বিজেপির সেই চক্রান্ত সফল হতে দেয়নি। সরকারের পক্ষে ইতিবাচক খবর জোগাবে এমন সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খুঁজছিল বিজেপি। ২০১৭ সালে মাত্রাতিরিক্ত ফিয়ের অজুহাতে পিটিআই-ইউএনআইয়ের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের চেষ্টা করেছিল প্রসার ভারতী। তখন পরীক্ষামূলকভাবে হিন্দুস্থান সমাচারকে ব্যবহার করা হয়েছিল। সে সময় তারা প্রায় তিন বছর বিনা খরচে পরিষেবা দিয়েছিল। যদিও মিলেছিল সরকারি বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য দিয়েছে। ২০২০ সালে লাদাখে চীনের অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত খবরের জেরে পিটিআই-মোদী সরকার কাজিয়া চরমে পৌঁছেছিল। সেই কারণে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে প্রসার ভারতী। প্রসার ভারতীর সিইও গৌরব দ্বিবেদী জানিয়েছেন, বাংলা, হিন্দিসহ ছ’টি ভাষার খবরের জন্য হিন্দুস্থান সমাচারের সঙ্গে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বার্ষিক ২ কোটি টাকার চুক্তি করা হয়। এবার ১২টি ভাষার জন্য সাড়ে ২৫ মাসের চুক্তি হয়েছে। প্রতিদিন প্রসার ভারতীকে তারা সব ভাষায় জাতীয় স্তরের ১০টি এবং ৪০টি আঞ্চলিক খবর দেবে বলে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

বস্তুত, সংবাদের গৈরিকীকরণ সম্পূর্ণ হল। এবার থেকে সরকারি টিভি ও রেডিওতে কেবল গেরুয়া খবরই সম্প্রচারিত হবে, এমনই অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরেই বেসরকারি সংবাদমাধ্যমগুলির উপরও মোদী সরকারের ছড়ি ঘোরানোর অভিযোগ উঠছে। গুজরাত হিংসায় মোদীকে দায়ী করে বিবিসি বিজেপির রোষে পড়েছে, তাদের এদেশের দপ্তরে আয়কর হানা হয়েছে। মোদী আমলে দূরদর্শনের নিরপেক্ষতাও সোনার পাথর বাটিতে পরিণত হয়েছে। এই ঘটনায় বিরোধীদের দাবি, মোদী সরকার বিরুদ্ধ মত শুনতে চায় না। নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যমকে তাই বয়কট করা হল। তারা আরও অভিযোগ আনছে, সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলিকে নিজেদের প্রচারে ব্যবহার করতে চাইছে মোদী সরকার তথা বিজেপি। বিরোধীদের বক্তব্য, এতে দূরদর্শন ও আকাশবাণী সঙ্ঘ পরিবারের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে, যা গণতন্ত্রের জন্যে বিপজ্জনক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen