ইন্দোর টেস্টের প্রথম দিনে ভারতকে চাপে ফেলে ৪৭ রানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রথম দিনের শেষে: ভারত: ১০৯ (কোহলি ২২, গিল ২১)
অস্ট্রেলিয়া: ১৫৬-৪
ব্র্যাড হগের টুইট, ‘এক দিনের টেস্ট?’
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন স্পিনার টুইটটি করেছেন ইন্দোরে ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে। এবার ঘরের মাঠে স্পিনসহায়ক উইকেটের শিকার ভারতই। বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনটা ভাল গেল না ভারতের। তিনটে সেশনেই ভারতকে ছাপিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের টিকিট পাকা করতে হলে ইন্দোর টেস্ট জিততেই হবে ভারতকে। নাহলে আবার ভাগ্য নির্ধারণের জন্য শেষ ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে শুরুটা মোটেই সুখকর হল না দলের।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৩৩.২ ওভারে ১০৯ রানে গুটিয়ে গেছে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের ভারত। ঘরের মাঠে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ওভারের হিসেবে এটি ভারতের চতুর্থ সংক্ষিপ্ততম ইনিংস। শুধু তা-ই নয়, এটি ঘরের মাঠে টেস্টে ভারতের পঞ্চম সংক্ষিপ্ততম ইনিংস।
টসজয়ী ভারতের জন্য ইন্দোরের প্রথম দিনের সকালটা ছিল দুঃস্বপ্নের। মিচেল স্টার্কের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুবার আউট হওয়া থেকে বেঁচেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এই টেস্টে প্যাট কামিন্স না খেলায় অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের কারণে বেঁচে যান। স্মিথ দুবারই আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিপরীতে রিভিউ নেননি। টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা গেছে, দু’বারই আউট ছিলেন রোহিত শর্মা।
তবে রোহিত এই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি প্যাভিলিয়নে ফিরে আসেন। ২৩ বলে ১২ করেছেন রোহিত। এরপর একে একে ফিরেছেন শুবমান গিল, চেতেশ্বর পূজারা, রবীন্দ্র জাদেজা, শ্রেয়াস আইয়ার, বিরাট কোহলি, শ্রীকর ভরত, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজ। ৭ উইকেটে ৮৪ রান নিয়ে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করেছিল ভারত। দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরুর পর বেশিক্ষণ টেকেনি তাঁরা। অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার ম্যাথু কুনেমান, নাথান লায়ন ও টড মার্ফি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছেন উইকেটগুলো। সিরাজ হয়েছেন রানআউট। এর বাইরে সব কটি উইকেট অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররা ভাগ করে নেন। কুনেমান নিয়েছেন ১৬ রানে ৫ উইকেট। টেস্টে এই প্রথম ৫ উইকেট পেলেন তিনি। লায়নের শিকার ৩টি, টড মার্ফি নিয়েছেন ১ উইকেট।
ভারতীয় ব্যাটারদের দেখে মনে হচ্ছিল, এই পিচে খেলতে সমস্যায় পড়বেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররাও। দ্বিতীয় ওভারে ট্রাভিস হেডকে আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে ধাক্কা দিয়েছিলেন জাডেজা। লাবুশেনও শূন্য রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জাডেজা নো বল করায় বেঁচে যান তিনি। সেটাই কাল হল। উসমান খোয়াজার সঙ্গে ৯৬ রানের জুটি বাঁধলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের রান করতে সুবিধা করে দিলেন ভারতীয় স্পিনাররা। একটু বেশি শর্ট বল করলেন। তার ফলে পিছনের পায়ে খেলতে সুবিধা হল খোয়াজাদের। নিজের অর্ধশতরান করলেন খোয়াজা। দেখে মনে হচ্ছিল, প্রথম ইনিংসে বড় লিড নেবে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ইনিংসে ভারতকে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরালেন জাডেজা। লাবুশেনকে ৩১, খোয়াজাকে ৬০ ও স্মিথকে ২৬ রানের মাথায় আউট করলেন তিনি। তত ক্ষণে অবশ্য লিড নিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
ফলে এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা, যে দ্বিতীয় সকালে অজিদের শেষ ৬ ব্যাটারকে একেবারে তড়িতগতিতে প্যাভিলিয়নে না ফেরাতে পারলে ইন্দোর টেস্টে আশা থাকবে না টিম ইন্ডিয়ার।