উত্তরাখণ্ডের প্রকাশ গোস্বামী, আস্ত পাহাড় কেটে ৫০০ মিটার রাস্তা তৈরি করেছেন!

বাগেশ্বরের গারুড় এলাকার গোয়ার গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ মুম্বইয়ের একটি আবাসন দেখভালের কাজ করতেন।

March 15, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ‘দা মাউন্টেনম্যান’ দশরথ মাজি’র কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়। বিহারের এই সন্তান একা হাতে আস্ত পাহাড় কেটে রাস্তা বানিয়েছিলেন। তাঁর কাহিনি আজ রীতিমতো কিংবদন্তির পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে। প্রেম, পরিশ্রম, মনের জেদ কতটা থাকতে পারলে একজন মানুষ সামান্য ছেনি-হাতুড়ির সাহায্যে একটা আস্ত পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করতে পারলেন! তাও দীর্ঘ ২২ বছর ধরে। বিহারের দশরথ মাজি’র জীবন শুধু সেলুলয়েডে নয়, ভারতের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে পড়েছে।


১৯৫৯ সালে বিহারে গ্রামের কাছেই পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান দশরথ মাজির স্ত্রী ফাল্গুনী দেবী। ডাক্তারখানা ছিল বহু দূরে। সেখানে যেতে গেলে অনেকটা পথ পেরোতে হত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। তাই ছেনি-হাতুড়ি-কোদাল দিয়ে আস্ত পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করে ফেলেছিলেন দশরথ মাজি।


এবার নতুন দশরথের সন্ধান মিলল উত্তরাখণ্ডে। ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে আস্ত পাহাড় কেটে ৫০০ মিটার রাস্তা তৈরি করে ফেলেছেন উত্তরাখণ্ডের প্রকাশ গোস্বামী। ন’মাসের মধ্যে পাহাড় কেটে গ্রামের রাস্তার সঙ্গে প্রধান সড়কের সংযোগ ঘটিয়েছেন প্রকাশ। অবশ্য পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করার নেপথ্যে প্রকাশের কারণ দশরথের থেকে আলাদা।


বাগেশ্বরের গারুড় এলাকার গোয়ার গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ মুম্বইয়ের একটি আবাসন দেখভালের কাজ করতেন। গত বছর তিনি গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামে ফিরে প্রতি দিন ৬০০ টাকা পারিশ্রমিকে দিনমজুরের কাজ করতে শুরু করেন। গ্রামে ফিরে আসার পর থেকেই তিনি দেখেন গ্রাম থেকে প্রধান সড়কে যাওয়ার কোনও উপযুক্ত রাস্তা নেই। গাড়ি তো দূরের কথা, মোটরবাইকও পাহাড় পেরিয়ে গ্রামে ঢুকতে পারে না। জরুরি পরিস্থিতিতেও বিপদে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। প্রশাসনকে বার বার বলেও কোনও সুরাহা হয়নি। এর পর নিজে থেকেই রাস্তা তৈরির কাজে হাত লাগান প্রকাশ।


তাঁর কথায়, ‘‘কিছু জায়গায় রাস্তা এখনও প্রশস্ত করা দরকার। কিন্তু রাস্তা প্রায় প্রস্তুত। এখন, চার চাকার গাড়িও আমার বাড়িতে পৌঁছে যেতে পারে। এই রাস্তা তৈরির কারণে গ্রামের প্রায় ৩০০ জন উপকৃত হবেন। আমি প্রশাসন বা গ্রামবাসীদের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। রাস্তা তৈরির জন্য প্রায়ই আমাকে কটূক্তি করা হত।” গত বছরের জুন থেকে প্রতি দিন সকাল ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিনি পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির কাজ করতেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen