ইমিউনিটি বাড়াতে শিশুদের ডায়েট চার্ট কী হবে? জেনে নিন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রতিটি শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পুষ্টি। বাচ্চার জন্মের পর অভিভাবককে তার পুষ্টি এবং সুস্থতার উপর নজর দিতে হয় । এখন প্রশ্ন হল কোন বয়সে শিশুকে কেমন ধরনের খাদ্য দেওয়া দরকার?
চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর ডায়েট চার্ট কেমন হবে
০-৬ মাস: এই ৬ মাস বাচ্চার জন্য শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। বাচ্চারা পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে যায়। ব্রেস্ট মিল্ক/ বুকের দুধে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ, ইপিএ, ডিএইচএ-এর মতো উপাদান। এছাড়াও এতে থাকে ইমিউনোগ্লোবিউলিন, যা অ্যান্টিবডির কাজ করে।
৬-১২ মাস: এই সময়েও বাচ্চাকে মায়ের দুধ দিতে হবে। ২ বছর পর্যন্ত বাচ্চাকে ব্রেস্ট মিল্ক দেওয়া যেতে পারে। তবে এই সময়ে সাপ্লিমেন্ট ফুডে বাচ্চাকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করাতে হবে। ৬ মাসের শেষের দিকে বাচ্চাকে ফর্মুলা খাবার দিন। এ সময়ে জলের সাথে ফলের রস মিশিয়ে পান করানো যেতে পারে। তরল খাদ্য হজম করতে পারলে বাচ্চাকে সুজি, পোরিজ পেস্ট বা আলু, গাজর ইত্যাদি ডালে সেদ্ধ করে তার সঙ্গে অল্প ভাতে মিশিয়ে পেস্ট করে খাওয়াতে পারেন। আবার আপেল সেদ্ধ, অর্ধেক ডিমের কুসুমও দেওয়া যেতে পারে। শিশুর বয়স প্রায় এক বছর হলে তখন অল্প করে ডিমের সাদা অংশ, মাছ খাওয়ানো যেতে পারে।
১-৩ ও ৪-৬ বছর: এই সময়ে আপনার বাচ্চাকে খাবারের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে খাবার দেওয়া প্রয়োজন। ICMR-এর গাইডলাইন অনুসারে ১ থেকে ৩ বছরের বাচ্চার গড়ে দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা ১০৬০ কিলোক্যালোরি। গড়ে দৈনিক প্রোটিন প্রয়োজন ১৬.৭ গ্রাম। ৪ থেকে ৬ বছরে বয়সে দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা ১৩৫০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিনের চাহিদা ২০.১ গ্রাম। তাই এই সময় বাচ্চার খাবারের মেনুতে রাখুন মাছ, ডিম, সয়াবিন, সব ধরনের ডাল এবং দই। পালং শাকের দে-একটা ছোট টুকরো ডালের মধ্যে দিয়ে দিন। রোজ একটা করে মরশুমি ফল খাওয়ান। সেই সঙ্গে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করান। দৈনিক তরলের চাহিদা পূরণ করতে আপনার বাচ্চাকে ঘরে বানানো ফলের রস, মিল্ক শেক পান করাতে পারেন।
৭-১২ বছর: ৭ থেকে ৯ বছর বয়সি শিশুর দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা হয় ১৬৯০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিনের চাহিদা হয় ২৯.৫ গ্রাম। কিন্তু ১০ থেকে ১২ বছর বয়সি ছেলেদের ক্যালোরির চাহিদা বেড়ে হয় ২১৯০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিনের চাহিদা ৩৯.৯ গ্রাম। আর ১০-১২ বছরের মেয়েদের দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা হয় ২০১০ কিলো ক্যালোরি। প্রোটিনের চাহিদা হয় ৪০.৪ গ্রাম। এই বয়সে বাচ্চার ক্যালশিয়াম ও আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই ওদের এই ক্যালশিয়ামের জন্য দুধ, ডিম আর ব্রকোলি, পালং, মাছ ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার দিন। প্রাতঃরাশে তাদের উপমা, দালিয়ার খিচুড়ি, চিকেন ও সব্জির পুর দিয়ে স্যান্ডুইচ, পোহার মতো জিনিস দেওয়া যেতে পারে। খাবারের মেনুতে রোজ দই অবশ্যই রাখবেন।