আজ সত্যজিতের অস্কার জয়ের বর্ষপূর্তি, বাঙালির গর্বের ৩১ বছর
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাঙালিকে গর্ব করার মতো অনেক দিন উপহার দিয়েছেন সত্যজিৎ। তেমনই একটি দিন হল ৩০শে মার্চ ১৯৯২। ওই দিনই অস্কারের স্বাদ পেয়েছিল বাঙালি। কলকাতায় তখন গভীর রাত। ওদিকে আমেরিকায় সেদিন সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অস্কার। ঘোষিত হচ্ছে লাইভ টাইম অ্যাচিভমেন্ট বিভাগে আস্কার প্রাপকের নাম, একজন বাঙালির নাম! তিনি সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ রায়ই হলেন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড অর্থাৎ অস্কার জয়ী প্রথম বাঙালি। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে পুরস্কার নিতে আমেরিকায় যেতে পারেননি সত্যজিৎ। কলকাতায় তখন তিনি মৃত্যুশয্যায়।
১৯৮৩ সালে সত্যজিতের প্রথম প্রথমবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। কমিয়ে দিয়েছিলেন কাজ। জানা যায়, ১৯৮৩ সালে তখন ঘরে বাইরে ছবির শুটিং চলছিল, তখনই হৃদরোগ আক্রান্ত হন সত্যজিৎ। এরপরই ক্যামেরা ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ। ১৯৮৪ সালে সন্দীপ রায়কে সঙ্গে নিয়ে ওই ছবির কাজ শেষ করেন। ১৯৮৭ সালে তাঁর বাবা সুকুমার রায়ের জীবননির্ভর একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন।
এরপর গণশত্রু, শাখা প্রশাখা এবং ১৯৯১ সালে আগন্তুক নির্মাণ করেন। ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে হৃদযন্ত্রের জটিলতার কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রায় একমাস ভর্তি ছিলেন সেখানেই এবং ৯২-এর ২৩শে এপ্রিল প্রয়াত হন সত্যজিৎ। জীবনের প্রান্ত সীমায় পৌঁছে মৃত্যুশয্যায় অস্কারের লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট (৬৪তম অস্কার) পুরস্কারে ভূষিত হন সত্যজিৎ। অ্যাকাডেমি মোশন অফ পিকচার্স কর্তৃপক্ষ কলকাতার হাসপাতালে এসে সত্যজিতের হাতে পুরস্কারটি হাতে তুলে দেয়। ৩০ মার্চ আমেরিকার আস্কারের মঞ্চ থেকে সত্যজিৎ রায়ের নাম ঘোষণা করেন হলিউডের খ্যাতনামা অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন। মৃত্যুশয্যা থেকেই সত্যজিৎ পুরস্কার জয়ের পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান। অস্কার মঞ্চের পর্দায় ভেসে ওঠেন সত্যজিৎ, গোটা বিশ্বের বাঙালিকে গর্বিত করেছিল মধ্যরাতের সেই মুহূর্ত। বিশ্ব সেদিন শেষবারের জন্যে প্রত্যক্ষ করেছিল ভারতীয় চলচ্চিত্রের অতিমানবীয় এক প্রতিভাকে।