N-95 মাস্ক পরে করোনার ঝুঁকি বাড়াবেন না, সতর্ক বার্তা কেন্দ্রের
ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই লোকজন N-95 মাস্কের পিছনে ছুটেছে। কেনাকাটির হিড়িকে বাজারমূল্যের অনেক বেশি দাম দিয়েও N-95 মাস্ক কিনতে দ্বিধা করেননি। বর্তমানে অবশ্য বাজারে N-95 অঢেল। লোকে একটার জায়গায় পাঁচটা কিনে রাখছেন। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার N-95 মাস্ক ব্যবহারের ঘোরতর বিরোধী। বিশেষত, ভালভড রেসপিরেটর্স থাকা N-95 মাস্কের ক্ষেত্রে। সোমবার (২১ জুলাই)-ই এই মর্মে এক নোটিশে N-95 মাস্কের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের আপত্তির কথা সবক’টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, N-95 মাস্কে উপকারের থেকে ‘ক্ষতিকারক’ দিকই বেশি। কেন্দ্রের বক্তব্য, যে কারণে মাস্ক পরা, সেই কোভিড সংক্রমণই ঠেকাতে পারে না N-95 মাস্ক। সংক্রমণের বিস্তার রোধে কেন্দ্র যে সমস্ত পদক্ষেপ করেছে, এন-৯৫ মাস্ক তার জন্য ক্ষতিকারক।
ভারতে কোভিড সংক্রমণের গোড়ায় বিশেষজ্ঞদের অনেকই দাবি করেছিলেন, সাধারণ মাস্কে করোনাভাইরাস ঠেকানো যাবে না। তাঁরাই N-95 মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই হঠাত্ করে N-95 মাস্ক কেনার হিড়িক পড়ে যায়। এখনও যে সবাই সাধারণ মাস্ক পরে ঘুরছেন, তা কিন্তু নয়। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে N-95 মাস্কের সেই চাহিদা এখনও কমেনি।
রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য ও মেডিক্যাল এডুকেশন বিষয়ক প্রধান সচিবের কাছে এই মর্মে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Ministry of Health) ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেস (DGHS)। চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভালভড রেসপিরেটর থাকা N-95 মাস্কের ব্যবহার ঠিকমতো হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য এটা ব্যবহারের অনুপযুক্ত। এতে ক্ষতি বেশি হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়া সাধারণ মানুষ যাতে এই মাস্ক ব্যবহার না করেন, সেদিকে নজর দিতে হবে। চিঠিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়, এতে ভাইরাস সংক্রমণ আটকায় না। বরং এই মাস্কের ব্যবহার ক্ষতিকারক হতে পারে।
DGHS রাজীব গর্গের এই অ্যাডভাইজরিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে হোমমেড মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
চিঠিতে বলা আছে, N-95 মাস্ক ভাইরাস সংক্রমণ ঠাকাতে পারে না। উলটে ভালভড রেসপিরেটর থাকা N-95 মাস্ক দিয়ে করোনাভাইরাস বেরিয়ে এসে, অপরকে সংক্রামিত করতে পারে। এ জন্যই এই N-95 মাস্ক সবার ব্যবহারের পক্ষে ক্ষতিকর।
কেন্দ্রের তরফে গত এপ্রিলে আরও একটি অ্যাডভাইজারি ইস্যু করা হয়েছিল। তাতেও ঘরোয়া মাস্ক দিয়ে নাক-মুখে ঢেকে রাস্তায় বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, প্রতিদিন ব্যবহারের পর মাস্ক পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। ব্যবহার করা যে কোনও কটনের কাপড় থেকে এই মাস্ক বানানো যাবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আরও জানায়, মাস্কের কাপড়ের রং নিয়ে কিছু যায় আস না। কিন্তু, ব্যবহারের পর মাস্কটি গরম জলে পাঁচ ফুটিয়ে, রোদে ভালো করে শুকনো করে নিতে হবে। ফোটানোর সময় জলে নুন দিতেও বলা হয়।
একজনের মাস্ক যাতে অপর জন ব্যবহার না করেন, সে বিষয়েও সতর্ক করে কেন্দ্র। পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে নিজস্ব মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সোমবার (২০ জুলাই) রাত পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৯১৭। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩৬ হাজার ৮১০ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৯৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশএ মারা গিয়েছেন ৫৯৬ জন।