হতাশ স্বঘোষিত ‘গোরক্ষক’রা! গবেষণা বলছে গোমূত্র কখনই মানুষের পানযোগ্য নয়
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সাম্প্রতিক কালে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির সদস্যদের বিভিন্ন সময়ে গোমূত্রের উপকারিতা নিয়ে গলা ফাটাতে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে বিতর্কও কং হয়নি। কিন্তু তাতেও হিন্দুত্বের ধ্বজাধারীরা থামতে নারাজ। মোদী সরকার তো গোমূত্র থেকে মানুষের ওষুধও তৈরি করার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল। সরকার-ঘনিষ্ঠ লোকেরা বলছেন, তাতে নাকি ক্যান্সারও সারবে!
হিন্দুত্বের বাজারে গত জানুয়ারিতে গুজরাটের এক আদালতের বিচারকও বলেন, গোরক্ষা জরুরি। কারণ গোমূত্র পান করলে কঠিন অসুখ সেরে যায়। তিনি আরও বলেন, গোবর যে কোনও রকম রেডিয়েশন থেকে বাঁচাতে পারে মানুষকে।
কিন্তু এবার এই বিষয়েই বিশেষজ্ঞের মতামত প্রকাশ্যে এল। ইন্ডিয়ান ভেটারনারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (IVR) গবেষকার যা জানালেন, তাতে হতাশ হবেন স্বঘোষিত ‘গোরক্ষক’রা। তাঁরা জানালেন, গোমূত্র কখনই মানুষের পানযোগ্য নয়। গরুর সদ্য ত্যাগ করা প্রস্রাবে থাকে একাধিক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। যা মানুষের শরীরে ঢুকে বিপদ ঘটাতে পারে।
আইভিআর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোমূত্র নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে বারেলির ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচারাল রিসার্চ। নেতৃত্ব দেন আইভিআরআইয়ের পশু ও প্রাণী বিশেষজ্ঞ ভোজ রাজ সিং এবং তিন পিএইচডি পড়ুয়া। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এসচেরিচিয়া কোলি নামের একটি ব্যাকটেরিয়া অতিসক্রিয় থাকে গোমূত্রে। যা পাকস্থলির কঠিন অসুখের কারণ হতে পারে। এছাড়াও মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর আরও ১৪টি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে গোমূত্রে। সব মিলিয়ে গরুর প্রস্রাব কখনই মানুষের পানযোগ্য নয়। গরু ও মহিষের ৭৩টি মূত্রের নমুনা পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, গরু নয়, মহিষের মূত্রে অনেক বেশি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুন রয়েছে। ভোজ জানান, এস এপিডার্মিডিস, ই রাপোনটিসির মতো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে মহিষের মূত্রে। যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করতে পারে। আইভিআরআইের গবেষক আরও বলেন, “অনেকে বলে থাকেন পরিশুদ্ধ ক্ষতিকর গোমূত্র ব্যাকটেরিয়া থাকে না। গোটা বিষয়টি গবেষণার। পরবর্তীকালে এই বিষয়েও গবেষণা করা হবে।”