বৈশাখী পূর্ণিমায় রাঢ় বঙ্গজুড়ে পূজিত হন ধর্মঠাকুর
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাঢ় বঙ্গে পূজিত হন ধর্মঠাকুর। কোথাও কোথাও তিনিই ধর্মরাজ বা ধর্ম নামেও পূজিত হন। নির্দিষ্ট আকারহীন প্রস্তরখণ্ডে তেল-সিঁদুর মাখিয়ে ধর্মঠাকুরের পুজো করা হয়। মূলত থানে ধর্মঠাকুরের পুজো করা হয়। পাথরের খণ্ডটিকে গাছের তলায় রেখে, বা উন্মুক্ত স্থানে রেখে ধর্মঠাকুরের আরাধনা করা হয়। কোথাও কোথাও আবার মন্দিরে রেখে পুজো করা হয়।
বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে, ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিন ধর্মঠাকুরের বিশেষ পুজা হয়। ধর্মঠাকুর কোনও একক দেবতা নন, বরং তিনি নানান মতের দেবতাদের সমাহার। আর্য-অনার্যদের আরাধ্য দেবতাদের মিশেলে তৈরি হয়েছিল বাংলার এই লৌকিক দেবতা। বাউড়ি, বাগদি, হাড়ি, ডোম সম্প্রদায়ের মানুষরা ধর্মঠাকুরের পুজো করেন। ভাষাবিদ সুকুমার সেনের মতে, ধর্মঠাকুরের পুজোয় বৈদিক, পৌরাণিক, আর্য-অনার্য উভয় পদ্ধতির সমাবেশ হয়েছিল। আবার হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতো পণ্ডিতরা, ধর্মঠাকুরকে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতীক হিসেবে দেখেছেন। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, লোকবিশ্বাসে ধর্মঠাকুরের স্থান ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবেরও চেয়েও উপরে। ধর্মঠাকুরের বাহন নিয়েও নানা মতভেদ রয়েছে। কোথাও কোথাও ধর্ম ঠাকুরের বাহন হিসেবে ঘোড়া দেখা যায়। আবার কেউ কেউ হাতিকেও ধর্মঠাকুরের বাহন বলে মনে করেন। বুদ্ধপূর্ণিমার দিন অর্থাৎ চলতি বছর ৫ মে থেকে ধর্মঠাকুরের পুজো শুরু হবে।