পরিবার না থাকলে আমিও হয়ত সুশান্তের পথই বেছে নিতাম: মনোজ

বুধবারই সোশ্যাল মিডিয়াতে সুশান্তের জন্য মোমবাতি মিছিলে অংশ নিয়েছেন মনোজ।

July 23, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

#‌ইন্ডিয়াওয়ান্টসসুশান্তট্রুথ। এই হ্যাশট্যাগে রীতিমতো সক্রিয় মনোজ তেওয়ারি। বলিউড তারকা কঙ্গনা রানাওয়াতকে সমর্থন করে তাঁর করা টুইট নিয়ে সোরগোল পড়ে গেছে । অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্য জানার জন্য কেন সোচ্চার মনোজ? উত্তর পাওয়া গেল, তিনি নিজেও যে একইরকম কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন, এবং পরিবার পাশে না থাকলে তিনিও সুশান্তের মতোই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেন।
সুশান্তের আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে সোচ্চার কঙ্গনা। তার জন্য তাঁকে বলিউডের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করছেন। এরপর মঙ্গলবার রাতে মনোজ টুইট করেন, ‘‌যাঁরা কঙ্গনাকে ওঁর বক্তব্যের জন্য আক্রমণ করছেন, তাঁরা নিজেদেরই মুখোশ খুলে দিচ্ছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যখন কর্মা বদলা নেয়, তখন ছেড়ে কথা বলে না। যা প্রাপ্য, সেটাই গিলিয়ে দেয়। তাই অপেক্ষায় থাকুন।’‌

কেন এত সোচ্চার মনোজ?‌ জানালেন, ‘‌সত্যিটা জানতেই হবে। এত উজ্জ্বল ছেলে কেন আত্মহত্যা করল, জানতে চাইব না? হতাশায় যদি আত্মহত্যা করে থাকে, সেটাও জানা উচিত বলে মনে করি। দেশের হয়ে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলাম। টানা ১৪টা ম্যাচ আমাকে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল বিনা কারণে। হতাশা আমাকেও গ্রাস করেছিল বিভৎসভাবে। সেদিনগুলো কোনওদিন ভুলব না।’

এরপরই মনোজের স্বীকারোক্তি, ‘ভয়ঙ্কর ভেঙে পড়েছি‍লাম। যোগ্যতা প্রমাণ করা সত্ত্বেও বারবার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তুমি যোগ্য নও। সেটা মেনে নিতে ভীষণ কষ্ট হয়েছিল। একটা সময়ে অন্য কিছু করার কথা ভাবিনি, তা নয়। খুব লড়াই করে বড় হয়েছি। আমার পরিবারের সবাই আমাকে নিয়েই বাঁচতে চেয়েছে। পরিবার না থাকলে আমিও হয়ত সুশান্তের পথই বেছে নিতাম। পারিনি পরিবারের কথা ভেবে। আর আশায় ছিলাম, পরে যদি আবার দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাই। অপেক্ষায় ছিলাম। এগুলোয় আত্মবিশ্বাস ভেঙে চুড়মার হয়ে যায়।’

সুশান্তের যেরকম নিজেকে বলিউডের ‘‌আউটসাইডার’‌ মনে হয়েছিল, মতো তাঁরও কি নিজেকে ভারতীয় দলে ‘আউটসাইডার’ মনে হয়েছিল? বাংলার ব্যাটসম্যানের উত্তর, ‘আউটসাইডার তো একটা শব্দ। অনেক কিছু মিলিয়ে দেখলে শব্দটা ভাবতেই পারি। দলের মধ্যে থেকেও দিনের পর দিন ব্রাত্য করে রেখে দিল। নেটে ব্যাটিংয়ের কোনও সুযোগই দেওয়া হল না। সবাই ডিনারে যাচ্ছে, সেখানে ডাকা হল না। সবাই হৈ–হুল্লোড় করছে, সেখানে বাদ দেওয়া হল। মাঝে মাঝে কেউ কথা বলছে না। এগুলো সমষ্টিগতভাবে দেখলে নিজেকে আউটসাইডার মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আমারও সেটাই মনে হয়েছে একেক সময়ে। এমন পরিস্থিতিতে সবরকমের কমিউনিকেশন বন্ধ হয়ে গেলে আত্মহননের চিন্তা মাথায় আসতেই পারে।’

মনোজ নিজের থেকেই সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সত্যতা জানতে আগ্রহী হয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, ‘কী উজ্জ্বল ছেলে! কত মেধাবী! কিছু দিনেই স্টার হয়ে উঠেছিল। ওর সঙ্গে প্রতারণা না করলে অল্প সময়ের মধ্যেই সুপারস্টার হয়ে যেত। সেখানে ওকে এইভাবে চলে যেতে হল, ভাবতেই পারছি না! সময় এসেছে সুশান্তের কেস থেকে সবার শিক্ষা নেওয়ার। নেপোটিজম বিদায় নেবে। যোগ্যকে জায়গা দিতেই হবে, এটা বিশ্বাস করি। যোগ্যকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তাই খুব জরুরি আসল সত্যটা বেরিয়ে আসার।’ 

বুধবারই সোশ্যাল মিডিয়াতে সুশান্তের জন্য মোমবাতি মিছিলে অংশ নিয়েছেন মনোজ। বলছিলেন, ‘ছোট জায়গা থেকে উঠে আসার যন্ত্রণা বুঝতে হবে। ছোট পরিবার থেকে বড় হয়েছি। তাই উপলব্ধি করতে পারি। সবার মধ্যেই একটা ভাল সত্তা থাকে। কিন্তু ইঁদুর দৌড়ে আমরা সেই ভাল সত্তা হারিয়ে ফেলছি। সেটা আর করতে েদওয়া যাবে না। নিজের কর্মই একদিন প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেবে আপনাকে।’‌

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen