সুকান্ত এক আগুন পাখির নাম
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ সুকান্ত ভট্টাচার্যর জন্মদিন। বাংলা কবিতায় বিপ্লব তথা সাম্যবাদের আগুন ঝরিয়েছিলেন এই ক্ষণজন্মা। ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটের মহিম হালদার স্ট্রিটে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন সুকান্ত। ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায় ছিল তাঁর পৈতৃক বাড়ি। পিতা নিবারণচন্দ্র ভট্টাচার্য বইয়ের ব্যবসা করতেন।
কলকাতার কমলা বিদ্যামন্দিরে বাল্যশিক্ষা শুরু হয় সুকান্তর। পরে বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাই স্কুলে ভর্তি হন। আট-নয় বছর বয়স থেকেই সুকান্ত লিখতে শুরু করেন। স্কুলের হাতে লেখা পত্রিকা সঞ্চয়ে একটি ছোট্ট হাসির গল্প লিখে সুকান্ত আত্মপ্রকাশ করেন। বিজন গঙ্গোপাধ্যায়ের শিখা কাগজে প্রথম তাঁর লেখা বিবেকানন্দের জীবনী ছাপা হয়। মাত্র এগারো বছর বয়সে তিনি রাখাল ছেলে নামে একটি গীতি নাট্য রচনা করেন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাল্যবন্ধু লেখক অরুণাচল বসুর সঙ্গে মিলে সপ্তমিকা নামের হাতে লেখা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন তিনি।
ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন সুকান্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের মন্বন্তর, স্বৈরাচারী শাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেন। ১৯৪৪ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ওই বছর আকাল নামক একটি সংকলনগ্রন্থ তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
সুকান্ত কমিউনিস্ট দলীয় পত্রিকা দৈনিক স্বাধীনতার কিশোর সভা বিভাগ সম্পাদনা করতেন। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ছাড়পত্র, পূর্বাভাস, মিঠেকড়া, অভিযান, ঘুম নেই, হরতাল, গীতিগুচ্ছ প্রভৃতি। সুকান্ত ছিলেন বিপ্লবী তথা স্বাধীনতার আপসহীন সংগ্রামী কবি। অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে প্রথমে ম্যালেরিয়া এবং পরে দুরারোগ্য যক্ষা আক্রান্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে কলিকাতার রেড এড কিওর হোমে মৃত্যুবরণ করেন এই সম্ভাবনাময় তরুণ।