কেন ফ্লপ হয়েছিল উত্তম কুমারের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’
“আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জীর।
ধরণীর বহিরাকাশে অন্তর্হিত মেঘমালা।”
আজও মহালয়ার ভোরে যার মহিষাসুরমর্দিনী না শুনলে অসম্পূর্ণ থেকে যায় আপামোর বাঙালির শারদোৎসব, তিনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ৷
তবে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের সেই মহালয়া পাঠেও এক সময় সংকীর্ণ রাজনীতি থাবা বসিয়েছিল৷ আচমকাই ১৯৭৬ সালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণর বদলে উত্তমকুমারকে দিয়ে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ করানো হয়৷ কিন্তু তা মানতে পারেনি বাঙালি৷ বিক্ষোভ দেখানো হয় আকাশবাণী ভবনের সামনে৷ ষষ্ঠীর দিন ফের সম্প্রচার করতে হয়েছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী। তবে এখানেই শেষ নয়৷ পরে বীরেন্দ্রবাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মহানায়ক৷ ক্ষমাও চান তিনি৷
উত্তমকুমার মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ করার পর তিনদিন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের পরিবার বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি।। বাড়ির সামনে হাজার হাজার লোক। ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন তাঁরা৷ গোলমাল হয়েছে। রাস্তায় নো এন্ট্রি বোর্ড লাগানো রয়েছে। উত্তমকুমার বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে বলেছিলেন, তিনি মহিষাসুরমর্দিনী করতে চাননি। তাঁকে জোর করে করানো হয়েছিল।
মহালয়া এবং মহিষাসুরমর্দিনী নিয়ে অনেকে অনেক গবেষণা করেছেন। কিন্তু বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের বিকল্প আজও পাওয়া যায়নি৷ উত্তমকুমার মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ করবেন, এটা ঠিক হওয়ার পর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ বলেছিলেন, লোকে নতুন কিছু চায়। উত্তমকুমারের মহালয়া মানুষ শুনবে। নতুনত্ব সবাই চায়।
কিন্তু আকাশবাণী কর্তৃপক্ষ উত্তমকুমারকে দিয়ে মহালয়ার ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ করিয়ে সফল হয়নি। বাধ্য হয়ে ফের বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী বাজাতে হয়েছিল রেডিওতে।