কড়া লকডাউন, নিয়ম ভাঙায় কান ধরে ওঠবোস করাল পুলিস
লকডাউন ভাঙায় চুঁচুড়া এক যুবককে শপথবাক্য পাঠ করাল পুলিস। চুঁচুড়া রেলস্টেশন চত্বরে ওই যুবককে কান ধরে ওঠবোসও করানো হয়। হুগলির চুঁচুড়া, শেওড়াফুলি সহ একাধিক জায়গায় লকডাউন ভাঙার অপরাধে বেশ কয়েকজনকে এভাবেই শাস্তি দিয়েছে পুলিস। একদিকে যেমন এই কড়া ভূমিকা, আবার অন্যদিকে নমনীয় পুলিস-প্রশাসনকেও দেখা গেল বৃহস্পতিবার। হাওড়া স্টেশনে এদিন লকডাউনের মধ্যেই স্পেশাল ট্রেন ঢুকেছে। বাড়ি ফেরার জন্য যানবাহন না পেয়ে সমস্যায় পড়েন দিল্লি ফেরত ওই ট্রেনের যাত্রীরা। তখনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিস। হাওড়া ও হুগলি দুই জেলাতেই পুলিস, প্রশাসন এদিন লকডাউন সফল করতে সক্রিয় ছিল। তবে বাসিন্দরাও স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি থেকেছে। দুই জেলাতেই সেভাবে গাড়ি চলেনি। বাসিন্দাদেরও পথেঘাটে প্রায় দেখাই যায়নি।
হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, লকডাউন ঠিকমতো পালন হচ্ছে কি না, নজর রাখতে পুলিস ও প্রশাসন সক্রিয় ছিল। ধারাবাহিক প্রচারের জেরে বাসিন্দারাও পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন প্রশাসনকে। জেলায় লকডাউন সফল হয়েছে। অন্যদিকে, হাওড়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া লকডাউন নির্বিঘ্নে পালিত হয়েছে। ট্রেন যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বাসের ব্যবস্থাও করেছিল তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাওড়া ও হুগলির পথেঘাটে লোকজন দেখা যায়নি। হুগলির চুঁচুড়া শহরের খাদিনা মোড়, ঘড়িমোড়, খরুয়াবাজার, আখনবাজারের মতো এলাকাগুলি ছিল শুনশান। একইভাবে শ্রীরামপুর সদর, শেওড়াফুলির মতো জনবহুল এলাকা, উত্তরপাড়া, বৈদ্যবাটি, কোন্নগরের মতো পুর এলাকাতেও রাস্তাঘাটে কাউকে সেভাবে দেখা যায়নি। যানবাহন রাস্তাতে ছিল না বললেই চলে। কোথাও বাজার বসেনি। গ্রামীণ এলাকাতেও চিত্রটা একইরকম ছিল। চন্দননগর পুলিস কমিশনারেট এলাকায় লকডাউন ভেঙে রাস্তায় নামায় মোট ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিন হাওড়া ব্রিজ ছিল ফাঁকা। জেলার কোথাও বাসিন্দাদের খুব একটা চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে কিছু বাইক আরোহী রাস্তায় নেমেছিল। ডোমজুড় থানার পুলিস দুই বাইক আরোহী সহ ২০টি বাইক আটক করেছে। হুগলিতে কয়েকজনকে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাওড়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বাসিন্দারা নিজেরাই এদিনের লকডাউন সফল করেছেন।
তবে পুলিস ও প্রশাসনের সক্রিয়তা দু’টি জেলাতেই চোখে পড়েছে এদিন। প্রচুর টহলদারি ভ্যান নামানো হয়েছিল। কন্টেইনমেন্ট জোন তো বটেই, অন্যান্য এলাকাতেও ছিল কড়া নজরদারি। এমনই একটি নজরদারি ভ্যান চুঁচুড়া স্টেশন চত্বর থেকে এক যুবককে আটক করে। লকডাউন ভাঙার পাশাপাশি তার মুখে মাস্কও ছিল না। পুলিস অফিসারা ওই যুবককে কান ধরে ওঠবোস করায়। সেই সঙ্গে তাকে দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। ওই যুবককে বলতে হয়, সে নিজে লকডাউন মানবে, মাস্ক পড়বে এবং অন্যদেরও এই বিধি মানার জন্য বলবে। শেওড়াফুলিতেও একই ঘটনা ঘটেছে। যদিও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। জেলার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই লকডাউন পালন করেছেন। লকডাউনে বাড়ি ফেরার চেষ্টা। হাওড়ায় বাস দেখেই হুড়োহুড়ি মানুষের।