একুশের আগে বদলি CBI-এর শীর্ষকর্তা
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট যত এগোচ্ছে, ততই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি ‘সক্রিয়’ হচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠছে। এমনকী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভা থেকেও অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার খেলায় নেমেছে কেন্দ্রের শাসক দল, কেন্দ্রীয় এজেন্সিদের কাজে লাগানো হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতেই সিবিআইয়ের কলকাতা জোনের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তবকে বদলি করে দেওয়া হল দিল্লিতে।
উল্লেখ্য, পঙ্কজ শ্রীবাস্তব এ রাজ্যের নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন অফিসার। সিবিআই-এর এই শীর্ষকর্তার অধীনেই চলছিল সারদা, রোজভ্যালির মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত। শুধু সারদা ও রোজভ্যালি নয়, তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী-সাংসদের যুক্ত থাকার মামলা নারদা’রও তদন্তও চলছিল পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের নজরদারিতেই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সিবিআইয়ের সদর দফতর দিল্লিতে যুগ্ম অধিকর্তা ট্রেনিং) পদে বদলি করা হয়েছে তাঁকে। যে পদে ছিলেন পঙ্কজ শ্রীবাস্তব, তার চেয়ে নতুন পদ অনেক গুরুত্বহীন বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। তবে জানা গিয়েছে, কলকাতা জোনে নতুন যুগ্ম অধিকর্তা আসা পর্যন্ত অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকবেন পঙ্কজই।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিধানসভা ভোটের বেশ কিছুটা আগে থেকেই সারদা, নারদা, রোজভ্যালির মতো মামলাগুলি নিয়ে তৎপরতা অনেকগুণ বাড়াতে চায় বিজেপি। তৃণমূলেরও অভিযোগ এমনই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তা করা হবে বলে আশঙ্কা ঘাস-ফুল শিবিরের অন্দরে। তাই দিল্লির ‘অনুগত’ কোনও অফিসারকে কলকাতার দায়িত্বে এনে তৃণমূলকে আরও বিপাকে ফেলতে চায় বিজেপি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সারদা মামলার তদন্ত সূত্রে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিল সিবিআই অফিসাররা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতা পুলিশ-সিবিআই সংঘাত চরমে ওঠে। ধরনায় পর্যন্ত বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই রাতেই কলকাতা পুলিশের একটি দল নিজাম প্যালেসে এই পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের সরকারি বাসভবন ঘেরাও করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে নিজাম প্যালেসে তাঁর বাসভবনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
অবশ্য গত জানুয়ারি মাসেও সারদা-রোজভ্যালি, নারদ স্টিং অপারেশনের তদন্তে থাকা বেশ কয়েকজন তদন্তকারী অফিসারের বদলির নির্দেশ জারি করেছিল সিবিআই। সারদা মামলার তদন্তকারী অফিসার তথাগত বর্ধন, রোজভ্যালি মামলার দুই তদন্তকারী অফিসার ব্রতীন ঘোষাল ও সোজম শেরপা এবং নারদ স্টিং অপারেশন মামলার তদন্তকারী অফিসার রঞ্জিত কুমারকে বদলি করা হয়। এবার একেবারে শীর্ষ কর্তাকে বদলি করা হল।