রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

আজ দ্বিতীয় দফার সম্পূর্ণ লকডাউন, সক্রিয় থাকবে পুলিস

July 25, 2020 | 2 min read

আজ, শনিবার ‘হপ্তা-মাঝের ছক ভাঙা’ লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। আর এবারও যথারীতি সক্রিয় থাকবে পুলিস-প্রশাসন। কড়া শাসনে ‘কঠোর’ লকডাউন পুরদস্তুর সফল করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। এমনকী বিমান পরিষেবাও বন্ধ থাকছে দমদম বিমানবন্দরে। নবান্নের আর্জি মেনে এই সিদ্ধান্ত অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের। হাওড়াগামী বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনও বাতিল করেছে রেলমন্ত্রক। আর তাই গৃহবন্দিত্বের প্রস্তুতি হিসেবে শুক্রবার রাজ্যের প্রায় প্রতিটি বাজারে ছিল উপচে পড়া ভিড়। অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র মজুত করার চেষ্টায় পিছিয়ে ছিলেন না কেউই।

কোভিড-সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতেই সপ্তাহে দু’দিন পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। বৃহস্পতিবার ছিল এই দফার ‘কমপ্লিট’ লকডাউনের প্রথম দিন। পুলিসের কড়া দাওয়াইয়ে ওই দিন সার্বিক ‘বন্‌঩ধ’-এর চেহারা নেয় গোটা রাজ্য। আজও ঠিক একই কৌশলে লকডাউন সফল করতে তৎপর পুলিস। জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছে নবান্নের নির্দেশিকা। তাতে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ লকডাউনের বিধি কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনওভাবেই ‘গা ছাড়া’ মনোভাব নেওয়া চলবে না। সব পরিষেবাই থাকবে স্তব্ধ। খুলবে না বাজার-হাট, দোকান-পাট। চলবে না বাস, ট্যাক্সি, অটোসহ বিভিন্ন যানবাহন।

এরপর ২৯ জুলাই, বুধবারও লকডাউন। তৃতীয় পর্যায়ের এই লকডাউনের পর সংক্রমণের শৃঙ্খল কতটা ভাঙল, তা পর্যালোচনা করবেন নবান্নের আধিকারিকরা। অংশ নেবেন বিশেষজ্ঞরাও। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ। তবে নবান্ন সূত্রে খবর, এলাকা ভিত্তিক পুরসভা ও পুলিস লকডাউনের দিন বাড়াতে পারে। যেমন, পাহাড়ে সাত দিনের একটানা লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার ৭-৮টি, বীরভূমের ৬টি, বাঁকুড়ার ৩টি পুরসভা এবং পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলার বহু এলাকায় ৫-৭ দিন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এরই পাশাপাশি রাজ্যে বাড়ছে কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২টি। সবচেয়ে বেশি কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে পূর্ব বর্ধমানে। কন্টেইনমেন্ট জোন নেই ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম বর্ধমানে। আশার কথা, শুক্রবার রাত পর্যন্ত কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়েনি কলকাতায়।

এদিন কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘রাজ্যের সঙ্গে দিল্লির কথা হয়েছে। সেইমতো আমাদের কাছে যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ আসে।‌ তবে জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। ওঠা-নামা করতে পারে কয়েকটি পণ্যবাহী বিমানও।’ শনিবার ৫০টি ও বুধবার ৪২টি বিমান কলকাতা থেকে ছাড়ার কথা ছিল। তা বাতিল হয়েছে। টিকিটের মূল্য যাত্রীরা কী ভাবে ফেরত পাবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তা যাত্রীদের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হবে, নাকি অন্য কোনও ট্যুরের সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্ট’ করা হবে, তা স্পষ্ট করেনি বিমান সংস্থাগুলি।

এদিকে, লকডাউনের আগের দিন দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাজারগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মুহূর্তেই বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় শাক-সব্জি। ভিড় কমাতে বহু বাজারে পুলিসি অভিযানও চলে। সকাল থেকেই তিল ধারণের জায়গা ছিল না কাটোয়া স্টেশন বাজারে। বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী, তমলুকের মানিকতলা, মেদিনীপুরের বড়বাজার, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলির একাধিক বাজারেও ছিল একই চিত্র। শিলিগুড়িসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পাইকারি বাজারেও ধরা পড়েছে ব্যাপক ভিড়ের ছবি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দোকানগুলিতে লাইন ছিলও চোখে পড়ার মতো।কোভিড-যোদ্ধাদের উদ্দেশে মুরাল। তার সামনে দিয়েই পথচলা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #lock down

আরো দেখুন