বাংলার গ্রামীণ সমাজের মিলনোৎসব গমা পূর্ণিমা
এগরা ও সংলগ্ন অনেক গ্রামে এই উৎসব পালন করা হয়। তবে শহরতলিতে যে রাখি উৎসব হয় তার সঙ্গে এই উৎসবের কিছুটা পার্থক্য আছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গমা পূর্ণিমা শুধুমাত্র লৌকিক আচার নয়, এর পাশাপাশি ভাই-বোনের চিরন্তন ভালোবাসা-স্নেহের প্রতীক এই উৎসব। বর্তমান শিক্ষিত সমাজে এটিা রাখি পূর্ণিমা নামে পরিচিত। এগরা ও সংলগ্ন অনেক গ্রামে এই উৎসব পালন করা হয়। তবে শহরতলিতে যে রাখি উৎসব হয় তার সঙ্গে এই উৎসবের কিছুটা পার্থক্য আছে।

‘গমা পূর্ণিমা’ কথাটি কোথা থেকে তা জানা যায় নি। হয়ত এই পূর্ণমায় গরুকে (গো মাতা) বিশেষ ভাবে পুজা করা হতো বলে একে গমা পূর্ণিমা বলা হতো । তবে এই উৎসব যে গ্রামীণ সমাজের মিলনোৎসব বলা চলে।

এই উৎসবের দিন সকাল থেকে ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে অন্য বর্ণের মানুষের হাতে রাখি পরিয়ে দেন এবং অনেকে একটি মন্ত্র (শ্লোক) উচ্চারণ করেন।
মন্ত্রটি হল:
অতি দানে বলি বদ্ধ
অতি মানে চ কৌরবা
অতি দর্পে হত লঙ্কা
সর্বম অতি গর্হিতম।
রাখি তৈরি হতো মুলত তুলো ও পাটের দড়িকে রং-এ চুবিয়ে। সেই রং হতো খুবই কাঁচা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সেই রাখি পরে যখন পুকুরে চান করে উঠত তখন জল হয়ে উঠতো রঙিন আর হাত ভরে উঠত নানান রং-এর জল ছাপে।

সাত্বিক ব্রাহ্মণরা যজমান বা অতি পরিচিত ব্যক্তিকে পৈতা বা উপবীত পরিয়ে দিতেন। অব্রহ্মণরা ঐ দিন উপবীত পরতো। তারপরের দিন শ্রদ্ধার সঙ্গে সেই উপবীত পুকুরের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হত। রাখি বা উপবীত পরার বিনিময়ে ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবকে সাধ্যমতো কিছু পয়সা দেওয়ার রীতি ছিল।