আমেরিকায় ‘গণতন্ত্র’-কে ঢাল করে সংখ্যালঘু নিরাপত্তার প্রশ্ন এড়ালেন মোদী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আমেরিকায় সফর চলাকালীন গণতন্ত্রকেই ঢাল বানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে নিজের দেশেই প্রশ্নের মুখে গণতন্ত্র, দাবি বিরোধে ! মাত্র ৩০ সেকেন্ডের একটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মোট ১২ বার উচ্চারণ করলেন —‘গণতন্ত্র’ শব্দটি। বিদেশে হলেও ৯ বছর পর প্রথমবার সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ড ধরে দেওয়া সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে অপ্রিয় প্রশ্নের সেই দায়সারা উত্তরে থাকল না প্রশ্নকর্তার নির্দিষ্ট ইস্যুটি।
প্রধানমন্ত্রীর সফর চলাকালীন মানবাধিকার সংগঠনগুলি বিজ্ঞাপন দিয়ে, বিক্ষোভ দেখিয়ে সরব হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। মার্কিন আইনসভার ৭৫ জন সদস্য পর্যন্ত চিঠি লিখে মোদীর সামনে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে সরব হওয়ার আর্জি জানিয়ে ছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে।
যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রথম প্রশ্ন করেন ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর রিপোর্টার সাবরিনা সিদ্দিকি। প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চান, ‘মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন বাইডেনের দলের সদস্যরাই। এব্যাপারে কি প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলেছেন?’ জবাবে বাইডেন বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দু’দেশেরই ডিএনএতে গণতন্ত্র রয়েছে।’
এরপরই সাবরিনা প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে —‘বহু মানবাধিকার সংগঠন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য এবং সমালোচকদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ তোলে। প্রধানমন্ত্রী মোদী হোয়াইট হাউসের যে ইস্ট রুমে দাঁড়িয়ে, সেখানে বিশ্বের বহু নেতা গণতন্ত্র রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর সরকার নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং বাকস্বাধীনতা রক্ষায় কী কী পদক্ষেপ নিতে চায়?’ জবাবে খানিকক্ষণের নীরবতার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘তিনি অবাক হচ্ছি সাবরিনার কথায়। কারণ, গণতন্ত্রই তাঁদের শক্তি। গণতন্ত্র তাঁদের শিরায়। তাঁরা গণতন্ত্রে বাঁচি। তাঁদের সরকার গণতন্ত্রের মৌলিক নীতিগুলি মেনে চলে। তাঁরা প্রমাণ করেছেন যে, গণতন্ত্র পারে। এবং যখন তিনি বলেন পারে, সেটা জাতি, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ নির্বিশেষে। ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে কোনও বৈষম্য নেই। তাঁদের গণতন্ত্রে বৈষম্যের প্রশ্নই আসে না। তাদের সরকারে কোনও ভেদভাব নেই।’ যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদীর উত্তরে চিঁড়ে ভেজেনি। তাঁর ওই বক্তব্যের পরও হোয়াইট হাউসের বাইরে বিক্ষোভ দেখান অনেকে।
এরপর মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দিতে গেলে ৬ জন মার্কিন সাংসদের বয়কট করেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাষণ ।