রাজ্যের বকেয়া মেটান, মমতার আবেদন শুনেও নিরুত্তর মোদি

বকেয়া পাওয়া নিয়ে মমতার আকুতি শুনে নিরুত্তর রইলেন প্রধানমন্ত্রী। কেবল নোট নিলেন। পরে ভাষণে সযত্নে এড়িয়ে গেলেন বাংলার প্রাপ্যের বিষয়টি।

July 28, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কোষাগার বেহাল। কেন্দ্রের কাছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বকেয়া। করোনা, আম্পান—খরচ জোগাতে নাজেহাল রাজ্য। ‘কুছ তো দিলা দিজিয়ে ইস টাইম পে।’ আগে তো বটেই, বিপর্যয়ের এই পর্বেও বারবার প্রাপ্য টাকা চেয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর মেলেনি। সোমবারও মিলল না। তবে এতদিন শুধু রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের মুখে এব্যাপারে অভিযোগ শোনা যেত। আর এদিন আইসিএমআরের ‘হাই টেক’ করোনা পরীক্ষাগার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচারে তা স্পষ্ট দেখাও গেল। বকেয়া পাওয়া নিয়ে মমতার আকুতি শুনে নিরুত্তর রইলেন প্রধানমন্ত্রী। কেবল নোট নিলেন। পরে ভাষণে সযত্নে এড়িয়ে গেলেন বাংলার প্রাপ্যের বিষয়টি।

ভিডিও বৈঠকে মুম্বই, কলকাতা এবং নয়ডা শহরে তিনটি অত্যাধুনিক করোনা পরীক্ষাগার উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি। কনফারেন্সে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব থ্যাকারের পরই আমন্ত্রণ জানানো হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রীকে পর্দার সামনে পেয়ে রাজ্যের কোনও দাবি জানাতে বাকি রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের জিএসটি আদায়ের ক্ষতিপূরণ, করোনা যুদ্ধের খরচ এবং উম-পুন বিধ্বস্ত বাংলার পুনর্গঠনে ন্যায্য পাওনা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। সেব্যাপারে আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি, কোনওটাই দেননি মোদি। উল্টে বৈঠকের মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে অর্থমন্ত্রক জানায়, গত ২০১৯–’২০ আর্থিক বছরের জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গকে ৬,২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য রাজ্যও তা পেয়েছে। তবে এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মতোই নির্বাক অর্থমন্ত্রক।

করোনা পর্বে একাধিক বৈঠকের জন্য নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ দিয়ে এদিনের বক্তব্য শুরু করেছেন মমতা। তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতার কথাও। তবে বিঁধতে ছাড়েননি রাজ্যপালকে। নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, ‘সাংবিধানিক পদে থেকে কেউ কেউ ক্রমাগত অসহযোগিতা এবং রাজ্যকে নানাভাবে বিব্রত করে চলেছেন। এটা হওয়া উচিত নয়।’ করোনা যুদ্ধে রাজ্যের আয়োজন ব্যাখ্যার পাশাপাশি রীতিমতো হিসেব দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, করোনা যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ২,৫০০ কোটি টাকা খরচ করেছি। ন্যাশনাল হেলথ মিশন থেকে পেয়েছি ১২৫ কোটি। এপ্রিল এবং মে মাসের জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪,১৩৫ কোটি টাকা রাজ্যের প্রাপ্য। সঙ্গে রয়েছে জুনের হিসেব। উম-পুনের পর কেন্দ্রের তরফে মাত্র হাজার কোটি এসেছে। বাকি টাকা মেটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এফআরবিএমে ঋণ নেওয়ার সীমা বাড়লেও সাড়ে তিন শতাংশের পরে বাকি দেড় শতাংশের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের চাপানো শর্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান মমতা। এক্ষেত্রে পুর কর, এক দেশ-এক রেশন কার্ড, বিদ্যুৎ বণ্টনে কেন্দ্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। তা নিয়েই আপত্তি মমতার।

অন্যদিকে, এদিনের বক্তব্যে করোনায় মৃত্যুহার কমা এবং সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। আরও বলেছেন, এই অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে শুধুই করোনা নয়, ভবিষ্যতে এইচআইভি, হেপাটাইটিস, ডেঙ্গুর মতো রোগের পরীক্ষাও হবে। প্রতিদিন ১০ হাজার টেস্টের সুবিধা পাওয়া যাবে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন।- নিজস্ব চিত্র 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen