চাঁদা ছাড়াই দুর্গাপুজো করবে সোনাগাছি, মানবে করোনা গাইডলাইনও
সমাজে বাস ঠিকই। তবে বরাবরই যেন সমাজ থেকে ‘ব্রাত্য’ ওঁরা। ওঁদের চলার পথও বড্ড কঠিন। তাই তো মাতৃ আরাধনার জন্য আদালতের দরজা পর্যন্ত দৌড়তে হয়েছিল ওঁদের। নানা রকমের ঘাত-প্রতিঘাত সামলানোর পরই এসেছে আইনি জয়। তারপর থেকে হইহই করে দুর্বারের মেয়েরা করেছেন দুর্গা আরাধনা। মণ্ডপ, আলোকসজ্জা সবেতেই শহরের অন্যান্য পুজো উদ্যোক্তাদের রীতিমতো টক্কর দিয়েছেন তাঁরা। তবে চলতি বছর পুজোয় অন্তরায় অদৃশ্য শত্রু। কোভিডের (Covid-19) হানায় প্রথমে পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। তবে পরে অবস্থান বদল করেন তাঁরা। স্থির করেন, করোনা বিধি মেনেই হবে পুজো।
করোনা আবহে ঠিক কীভাবে পুজো হবে এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি সোনাগাছিতে? পুজো উদ্যোক্তাদের একজন জানিয়েছেন, চলতি বছর কারও থেকেই পুজোর জন্য চাঁদা নেওয়া হবে না। কিন্তু এত খরচ আসবে কোথা থেকে? সে বিষয়ে পুজো উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, চলতি বছর প্রতিমার জন্য একটি ইভেন্ট প্ল্যানার সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাঁরা ১৫ দিনের মধ্যে জানাবেন মূর্তি দিতে পারবেন কিনা। মূর্তি দিলে ভাল। আর না দিতে পারলে ঘটপুজোই হবে। এছাড়াও ফোরাম ফর দুর্গোৎসব যে গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছে, তা প্রতি পদে মানা হবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে পুজোয় একসঙ্গে ১৫ জনের বেশি মানুষকে ভিড় জমাতে দেওয়া হবে না বলেই দাবি দুর্বারের পুজো উদ্যোক্তাদের।
সোনাগাছিতে আগে ৭ হাজার কর্মী কাজ করতেন। দিনে কমপক্ষে ২০ হাজার খদ্দের আসতেন। তবে এখন করোনার হানায় যেন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে যৌনপল্লির চেহারা। সংক্রমণের ভয়ে দেখা মেলে না খদ্দেরের। তাই তো কার্যত শুনশান হয়ে রয়েছে সোনাগাছি। আয়ও নেই কর্মীদের। দিনের পর দিন রোজগার না হওয়ায় পেটে টান পড়েছে অনেকের। বাধ্য হয়ে পেশা বদলের কথাও ভাবছেন কেউ কেউ। তবে এই পরিস্থিতিতেও দুর্গাপুজোয় কোনও ছেদ পড়তে দেবেন না দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সদস্যরা। পুজোর সময় রাজ্যের পরিস্থিতি কেমন থাকে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলেই।