গুরু পূর্ণিমা কী? কেন পালিত হয়? জানুন এই দিনটির মাহাত্ম্য
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গুরু’ শব্দটি ‘গু’ এবং ‘রু’ এই দুটি সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত। ‘গু’ শব্দের অর্থ ‘অন্ধকার’ বা ‘অজ্ঞতা’ এবং ‘রু’ শব্দের অর্থ ‘ দূরীভূত করা’। ‘গুরু’ শব্দটি দ্বারা এমন ব্যক্তিকে নির্দেশ করা হয় যিনি অন্ধকার দূরীভূত করেন, অর্থাৎ যিনি অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে যান তিনিই গুরু। গুরু আমাদের মনের সব সংশয়, অন্ধকার দূর করেন এবং নতুন পথের দিশা দেখান।
গুরু পূর্ণিমা হল একটি বৈদিক প্রথা, যার মধ্য দিয়ে শিষ্য তাঁর গুরুকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে থাকেন। আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় গুরু পূর্ণিমা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই তিথিতেই মুণি পরাশর ও সত্যবতীর ঘরে মহাভারতের রচয়িতা মহর্ষি বেদব্যাস জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই এই দিনে মহর্ষি বেদব্যাসের জন্ম জয়ন্তীও পালন করা হয়।
কথিত আছে, মহর্ষি বেদ ব্যাসের শৈশব থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। পরে পিতা-মাতার অনুমতিতে মহর্ষি বেদ ব্যাস বনে গিয়ে ভগবানের তপস্যা শুরু করেন। মহর্ষি বেদ ব্যাস আষাঢ় মাসের এই দিনেই তাঁর শিষ্য ও ঋষিদের শ্রী ভাগবত পুরাণের জ্ঞান দান করেছিলেন। সেই থেকে মহর্ষি বেদ ব্যাসের ৫ জন শিষ্য এই দিনটিকে গুরু পূর্ণিমা হিসাবে উদযাপন শুরু করেন। এরপর প্রতি বছর আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার দিনটিকে গুরু পূর্ণিমা বা ব্যাস পূর্ণিমা হিসেবে পালন করা হয়।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, বোধিজ্ঞান লাভের পরে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় সারনাথে প্রথম শিষ্যদের উপদেশ দেন গৌতম বুদ্ধ ।
গুরুর দেখানো পথে চললে, কোনও ব্যক্তি শান্তি, আনন্দ ও মোক্ষ প্রাপ্ত করতে পারেন। তাই গুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে বৈদিক যুগ থেকেই গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়ে আসছে।
গুরু পূর্ণিমার গুরুত্ব: শাস্ত্রে দেবতাদের থেকেও গুরুর মর্যাদা বেশি। স্বয়ং ভগবান শিব গুরু সম্পর্কে বলেছেন, গুরুদেবো গুরুধর্মো, গুরু নিষ্ঠ পরান তপঃ’। গুরুঃ পরতরম নাস্তি, ত্রিভরম কথ্যামি তে… মানে গুরুই ঈশ্বর, গুরুই ধর্ম, গুরুর প্রতি আনুগত্যই পরম ধর্ম।
মানুষের বিশ্বাস, গুরু পূর্ণিমার দিন তাঁর গুরুকে পুজো করা বা তাঁর আশীর্বাদ গ্রহণ করা উচিত তাহলে জীবনের বাধাগুলি দূর হয়।